শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর হাবিবুর রহমান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর এক ছাত্রী ধর্ষনের শিকার হয়েছে। রাতভর সামাজিক সমঝোতার চেষ্টা আর মামালা গ্রহনে রাজনৈতিক চাপে দিনভর গড়িমসি করেছে গোসাইরহাট থানা পুলিশ। সংবাদকর্মীদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকেলে থানা মামলা গ্রহন করেছে।

গোসাইরহাট থানা ও মেয়েটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের উত্তর খানকান্দি গ্রামের মিনু খানের বখাটে পূত্র রজব আলী তার প্রতিবেশী সালাল উদ্দিন দেওয়ান এর পঞ্চম শ্রেনী পড়–য়া মেয়ে (সুমি আক্তার) কে দীর্ঘদিন থেকে উত্যক্ত করে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মেয়েটির মা বাবা স্থানীয় একটি দরগায় ওরস শুনতে গেলে মেয়েটি ও তার অন্য ভাই বোন ঘরে ছিল। মা বাবা বাড়ি নেই এ খবর জানতে পেরে বখাটে রজব রাত ৮ টা থেকে সালাল দেওয়ানের ঘরের পাশে ওৎ পেতে থাকে। রাত পৌনে ৯টার দিকে মেয়েটি প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে ঘর থেকে বের হলে রজব তার মুখ চেপে ধরে বাগানে টেনে নিয়ে ধর্ষন করে। প্রতিবেশী ফারুক দেওয়ান মেয়েটির চিৎকার শুনতে পেরে তাকে উদ্ধার করে। ধর্ষনের কথা জানজানি হলে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রাতভর সামাজিক ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করে। মেয়েটির মা বাবা সামাজিক বিচার না মেনে গভীর রাতে গোসাইরহাট থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ভোর ৫টার দিকে মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসে।

মেয়েটির মা বাবা মামলা করতে চাইলে সরকার দলীয় এক প্রভাবশালী নেতা মামলা গ্রহন না করার জন্য পুলিশকে চাপ দেয়। পুলিশ দিনভর মেয়েটিকে তার মা বাবা সহ থানায় বসিয়ে রাখে। শুক্রবার দুপুরে সংবাদকর্মীরা বিষয়টি জানতে গোসাইরহাট থানায় গেলে এরপর পুলিশ মামলা গ্রহন করে মেয়েটিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রেরন করে।

ধর্ষনের শিকার মেয়েটির বাবা সালাল দেওয়ান বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই মিনু খানের বখাটে ছেলে রজব আমার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে পথে ঘাটে উত্যক্ত করতো। আমরা স্থানীয় মুরুব্বীদের জানিয়েও কোন ফল পাইনি। গতকাল রাতে আমরা স্বামঅ স্ত্রী পাশের গ্রামে ওরস শুনতে গেলে খালি বাড়ি পেয়ে ওই বদমায়েশ রজব আমার মেয়ের শ্লীলতা হানি করেছে। আমাকে মামলা না করার জন্য বৃহষ্পতিবার রাত থেকেই নানান ধরনের চাপ ও হুমকি প্রদান করা হয়েছে। আমি আমার মেয়ের ধর্ষনকারীর দৃষ্টন্তমূলক শাস্তি চাই।

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে খবর পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। বিষয়টিকে সামাজিক মীমাংসার কথা বলে কেউ কেউ আমাকে অনুরোধ করলেও আমরা থানায় মামলা গ্রহন করেছি। আসামী আটকের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

(কেএনই/এটিআর/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৪)