স্টাফ রিপোর্টার : বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক কালের কণ্ঠে বিনা বেতনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটির নামে প্রতরণার অবসান দাবি করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেছেন, বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক ছুটির কোনো বিধান দেশের কোনো আইনে নেই। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেছেন, ১৬ মাস ধরে বিনা বেতনে ছুটিতে রাখা কর্মীদের ছুটিকালীন বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করে তাদের কাজে যোগদানের সুযোগ দিতে হবে অথবা আইনানুগভাবে চাকরির অবসান ঘটাতে হবে। কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এ দাবি না মানলে প্রয়োজনে কালের কণ্ঠ অফিস তথা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সামনের সড়ক বন্ধ করে তাদের অবরোধ করা হবে।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এক অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এমন হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন ডিইউজে সভাপতি। কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, করোনাকালে গণছুটির নামে কালের কণ্ঠ তার কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। কালের কণ্ঠ অন্যায় করেছে। দেশের আইন ভঙ্গ করেছে, শ্রমআইন ভঙ্গ করেছে। করোনাকালে গণমাধ্যমকর্মীদের ছাঁটাই না করতে আহবান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী। কিন্তু কালের কণ্ঠের মালিকপক্ষ তা মানেনি। কালের কণ্ঠ যে অন্যায় করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না।

সাংবাদিক আজাদুর রহমান চন্দনের নেতৃত্বে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম, সদস্য শাহজাহান সাজু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কবীর আলমগীর এবং কালের কণ্ঠ'র প্রেস সেকশনের কর্মী জসিম উদ্দিন।

কালের কণ্ঠ’র অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক আজাদুর রহমান চন্দন, বিশেষ প্রতিনিধি আশরাফ-উল-আলমসহ ৩৪ জন সাংবাদিক ও কর্মীকে গত বছর ১০ জুন মহামারিজনিত ‘লকডাউনের’ মধ্যে এক যোগে বিনা বেতনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি দেওয়া হয়। প্রেস সেকশনেরও বিপুল সংখ্যক কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়। এত দিনেও কাউকে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া কাছাকাছি সময়ে উলেখযোগ্য সংখ্যক সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মীকে পদত্যাগ করানো কিংবা চাকরিচ্যুত করা হয়। বিনা বেতনে ছুটিতে রাখা কয়েকজনকে বিভিন্ন সময়ে পাওনা পরিশোধ করার প্রলোভন দেখিয়ে পদত্যাগ করানো হলেও দীর্ঘদিন কাউকে কোনো পাওনা দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় কালের কণ্ঠ’র চাকরিচ্যুত, পদত্যাগকারী ও বিনা বেতনে অনির্দিষ্টকাল ছুটিতে রাখা সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় পাওনা আদায় এবং বিনা বেতনে বাধ্যতামূলকভাবে অনির্দিষ্টকালের ছুটি বাতিল করার দাবিতে গত ২৮ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন বিষয়টি সুরাহা করার জন্য কর্তৃপক্ষ আলোচনায় ডাকলে কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়। কিন্তুপদত্যাগকারী কর্মীদের পাওনা বাবদ চেক ১৫ সেপ্টেম্বর হস্তান্তর করলেও বিনা বেতনে ছুটির বিষয়টি ফয়সালা করতে গড়িমসি করছে কালের কণ্ঠ কর্তৃপক্ষ। কখনো বলে পরে সুরাহা করা হবে, আবার কখনো বলে ১৬ মাস আগের তারিখে পদত্যাগ করে পাওনা নিতে। এ অবস্থায় গত ১৮ সেপ্টেম্বরও মানববন্ধন করা হয়েছিল।

(পিএস/এসপি/অক্টোবর ০২, ২০২১)