এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : একজন হাওলাতি চিকিৎসক দিয়ে চলছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আড়াই লক্ষ মানুষের চিকিৎসা। এতে সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে রোগীদের। কেউ সামান্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসলেই তাকে রেফার্ড করতে হচ্ছে ফরিদপুর বা রাজবাড়ী হাসপাতালে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সরকারীভাবে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের আড়াই লাখ জনবসতির স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শর্য্যা হাসপাতাল ১টি, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪টি, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩টি ও কমিউনিটি ক্লিনিক ২৩ টি নির্মান করেছে। পূর্বে জনসংখ্যা অনুযায়ী ৩১ শর্য্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ১জন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ১জন, মেডিকেল অফিসার ২জন, কনসালট্যান্ট সার্জারী ১জন, মেডিসিন ১জন, গাইনী ১জন, এনেসথেশিয়া ১জন ও ডেন্টাল সার্জন ১জন সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১জন করে মোট ১৬ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে ৫০ শর্য্যা হাসপাতালে উন্নীত হলেও নেই কোন চিকিৎসক। সম্প্রতি সময়ে চিকিৎসা কার্যক্রম করতেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাফিন জব্বার ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফারুক হোসেন। দু,জনই বদলী হয়েছেন। বর্তমানে ডাঃ সুমন কুমার সরকার ডেপুটিশনে এসে চিকিৎসা দিচ্ছেন। অন্যান্য পদগুলো রয়েছে শুন্য। এ হাওলাতি চিকিৎসক দিয়েই চলছে উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রেও নেই কোন চিকিৎসক।

অপারেশন থিয়েটার (ও টি) সম্পূর্ণরূপে বন্ধ, ২০০৯ সাল থেকে বিকল হওয়ার কারণে বন্ধ রয়েছে এক্স-রে মেশিনটিও। বর্তমানে এক্স-রে মেশিন নতুন করে বরাদ্দ প্রদান করা হলেও অপারেটর না থাকার কারণে হাসপাতালে বসানোর অজুহাতে পড়ে রয়েছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের চাপে মাঝে মধ্যে গাইনী ডাক্তারসহ দক্ষ ডাক্তারদের পোষ্টিং হলেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে অনেকেই যোগদান না করে তাদের পছন্দমত স্থানে চলে যান। দীর্ঘদিন চিকিৎসা কাজে ৪র্থশ্রেনী কর্মচারী ২৩টি পদের অর্ধেক পদই শূন্য রয়েছে । ব্যয়ভার বহন করতে না পারায় ৪০ কেবির জেনারেটরটি চালু করার অভাবে গোডাউনে পড়ে আছে। ২০১১ সালে ২৫ মার্চ ৩১ শর্য্যা হতে ৫০ শর্য্যা হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়। ৫০ শর্য্যায় উন্নীতকরনের পর প্রশাসনিক অনুমতিসহ কিছু উপকরনও বরাদ্দ পাওয়া ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও জনবল রয়েছে শুন্য। এ অবস্থার মধ্যেই দিয়েই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে ৫০ শর্যার স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম। এলাকাবাসী দ্রæত হাসপাতালটিতে জনবল পদায়নের দাবি জানিয়েছেন।

হাসপাতালে আসা রোগীরা জানান, এক্স-রে মেশিন না থাকার কারণে রাজবাড়ী, ফরিদপুর অথবা বেসরকারী ক্লিনিকে যেতে হয়। এতে যেমন বাড়ছে সময় ও খরচ ব্যয়।

বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাফিন জব্বার জানান, ৫০ শর্য্যার কার্যক্রম শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। জরুরী ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ, এক্স-রে মেশিন সচল করতে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবগত করেছি। আমার ইতিমধ্যেই বদলী হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আম্বিয়া সুলতানা বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি।

উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, চিকিৎসকরা উপজেলা পরিষদে ন্যস্ত থাকলেও যোগদান বা বদলী হলেও আমাকে অবগত করা হয় না।
(একেএ/এএস/অক্টোবর ০৫, ২০২১)