ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে জেলা শহর মাইজদী টাউনহল মোড়ে এক বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই মানবন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন।

বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের বক্তারা জানান, বাংলাদেশের প্রাচীন জেলার মধ্যে নোয়াখালী জেলা অন্যতম। তাই নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সমন্বয়ে নোয়াখালীকে ১০ম প্রশাসনিক বিভাগ হিসেবে বাস্তবায়ন করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোর দাবী জানান বৃহত্তর নোয়াখালী বাসী। পরে তারা প্রধান সড়কে এক বিশাল র‌্যালী করেছে। এই সময় আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোরশেদ, সাইফুর রহমান, মিজান রহমান, সাইফুর রহমান রাসেল, মুনিম ফয়সাল, তাহসান তুহিন, শাহাদাত শাকিল, আকলিমা খানম, নুসরাত জাহান, সুমন চন্দ্র ভৌমিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে বক্তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘‘নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এই ছয় জেলার মানুষের সংস্কৃতি, কৃষি ও যাতায়াত সুবিধা বিবেচনা করে নোয়াখালী বিভাগ প্রতিষ্ঠা করলে অত্র অঞ্চলের প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষের চাকুরী, ব্যবসা- বাণিজ্য, প্রশাসনিক কার্যক্রম অত্যন্ত দ্রততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে। আর এই ছয় জেলার মানুষের আঞ্চলিক ভাষা, কৃষ্টি-কালচারও প্রায় একই রকম বিধায় নোয়াখালী বিভাগ গঠন অত্যন্ত যুক্তিসংগত বলে অত্র অঞ্চলের বিজ্ঞজনেরা মনে করেন। এছাড়া, নোয়াখালীর দক্ষিণ উপকূলে নিঝুমদ্বীপ, স্বর্ণদ্বীপসহ প্রায় দশ হাজার বর্গ কিলোমিটারের চাইতেও বেশি নতুন ভূমি নোয়াখালীর বুকে জেগে উঠছে যা বাংলাদেশের জন্য এক অফুরন্ত সম্ভবনা নিয়ে আসছে বলে এখানকার সুধীজন মনে করেন।

আর এতে নোয়াখালী বিভাগ গঠিত হলে এটি হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিভাগ। নোয়াখালীর ভাষাগত বৈশিষ্ট যার সীমানা বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চল ছাড়িয়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলার তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকার লোকজন নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে।

এ জেলায় জন্মেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রহুল আমিন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক স্পীকার ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মালেক উকিলসহ অনেক ব্যক্তিত্ব, যাঁরা নিজ কর্মে কীর্তিমান। নোয়াখালীর রয়েছে অনন্য ভাষাগত বৈশিষ্ট যার সীমানা বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চল ছাড়িয়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলার তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকার লোকজন নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে।

তাছাড়া, নোয়াখালী জেলার সাথে বাকি পাঁচ জেলা অর্থাৎ ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমূহের সাথে সড়ক ও রেলপথে চমৎকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে বিধায় ব্রিটিশ আমল হতে রয়েল জেলা নামে খ্যাত নোয়াখালীকে বিভাগ গঠন অত্যান্ত যুক্তিসংগত দাবি । নোয়াখালীর দক্ষিণে রয়েছে নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্যমন্ডিত দ্বীপ নিঝুম দ্বীপ ও সাগরকন্যা হাতিয়া দ্বীপ। আর তাই নোয়াখালীকে বিভাগ করা হলে অত্র উপকূলীয় অঞ্চল কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে বলে নোয়াখালী বিভাগ গঠনের নানা যুক্তি তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য র্দীঘ ১৫ বছর ধরে নোয়াখালীর জনসাধারণ ঢাকা-চট্রগ্রামসহ জেলায় বহুবার আন্দোলন, সংগ্রাম , মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, গণসাক্ষরসহ দেশে বিদেশে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।

(এস/এসপি/অক্টোবর ২৩, ২০২১)