ইঁদুর এবং একটি বিড়ালের গল্প:

একসময় একটা বাড়িতে কতগুলো ইঁদুর বাসা বেঁধেছিল। ইঁদুরগুলো বাড়ির মালিকের ক্ষতি করছিল নানারকমভাবে। বাড়ির মালিক অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে তাদের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য একটা বিড়াল নিয়ে এল।

বিড়ালটা প্রতিদিন অনেকগুলো করে ইঁদুর মারতে শুরু করল। তাতে ইঁদুরগুলো ভীষণ ভয় পেয়ে সর্বদাই তাদের গর্তের মধ্যে আটকে রইল ।বাইরে বেরিয়ে আসতে তারা সাহস করল না। তারা কীভাবে এই বিপদ থেকে রক্ষা পাবে সেটা নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটা সভা ডাকল।অনেকে অনেক রকম পরামর্শ দিল কিন্তু কোনোটাই উপযুক্ত বলে মনে হলো না ।

অবশেষে এক বৃদ্ধ ইঁদুর দাঁড়িয়ে বলল, “আমি একটা খুব ভালো উপায়ের কথা চিন্তা করেছি ।আমরা যদি বিড়ালটির গলায় ঘণ্টা বেঁধে দি তাহলে বিড়ালটা যে আসছে সেই ঘণ্টার শব্দ শুনেই পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে।”বৃদ্ধ ইঁদুরের যৌক্তিকতার সবাই খুব প্রশংসা করল ,

কিন্তু অন্য একটা বৃদ্ধ ইঁদুর তাঁর আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল ,”আমাদের বৃদ্ধ বন্ধুটি এইমাত্র যে উপায়ের কথা করলেন তা নিঃসন্দেহে খুবই ভালো কিন্তু সমস্যাটা হল ;বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে??”তাঁর কথা শুনে সকলেই চুপ করে রইল, কেউ একটি কথাও বলতে পারল না কারণ বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার মতো কেউ সেখানে ছিল না।

নীতিকথা : ”বলা খুব সহজ কিন্তু করা কঠিন”।

লোভী কুকুর

একদিন একটি লোভী কুকুর একটি কসাই – এর দোকান থেকে এক টুকরো মাংস চুরি করল। তা দেখে কসাই তাঁর পিছনে তাড়া করল কিন্তু কিছুদূর পর্যন্ত গিয়ে সে তার নিজের দোকানে ফিরে এল। এদিকে কুকুরটা ভীষণ ভয়ে ছুটতে লাগল প্রাণপণে।

অনেকটা যাওয়ার পর সে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল যে কসাইটা তার দিকে তাড়া করে আসছে কিনা। কাউকে আসতে না দেখে সে তার গতি কমিয়ে ধীরে সুস্থে হাঁটতে লাগল।কিছুক্ষণ পরে সে এসে পৌঁছল একটা ছোট্ট নদীর কাছে।

সে তখন মুখের মাংসের টুকরোটা নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে নদী পার হতে লাগল ।সেসময় নদীর পরিষ্কার জলে তার প্রতিবিম্ব ভেসে উঠতে সে সেদিকে তাকিয়ে দেখল। লোভী আর বোকা কুকুরটা নিজের প্রতিবিম্বকে মাংস মুখে অন্য একটি কুকুর মনে করল।সেই মাংসের টুকরোটাও পাওয়ার জন্য তার খুব লোভ হলো।

সে এবার অন্য কিছু চিন্তা ভাবনা না করে নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়ল আর সঙ্গে সঙ্গে জলের স্রোত তাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল।লোভী কুকুরটা মাংসের টুকরোটার সাথে সাথে তার মূল্যবান প্রাণ টা ও হারাল।

নীতিকথা : ”অতিরিক্ত লোভ মানুষের সর্বনাশের কারণ”