টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নরদহি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ১০ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে ওই গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাসলিমা আক্তারের ফরম পূরণে ৫ হাজার টাকা দাবি করে প্রধান শিক্ষক। টাকা দিতে না পারায় ওই ছাত্রীর ফরম ফিলাপ বন্ধের পর্যায়ে যায়। বিষয়টি তৎকালীন জেলা প্রশাসককে অবগত করলে তিনি ফরম ফিলাপের টাকা প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষক ভূয়া ভাউচার তৈরি করে নিজেই বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব করেন। রশিদ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতন আদায় করে ওই টাকা হিসাব বহিতে জমা না করার অভিযোগও রয়েছে।

৮ম ও ৯ম শ্রেণীর রেজিষ্ট্রেশনের সময় অতিরিক্ত টাকা ও এসএসসি ফরম ফিলাপেও অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়টি অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। মিটিং না করেই ব্যাক ডেটে রেজুলেশন করার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত ২০ সেপ্টেম্বর নিয়োগ বন্ধ করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের কাজ করা এবং কমিটির সদস্যদের নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এলাকার মানুষ কোন বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলে তিনি অসুস্থতার অজুহাত দেন। কয়েক দিনের ব্যবধানে দুইবার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ৮ম শ্রেণীর রেজিষ্ট্রেশন ফি ১০০ টাকার পরিবর্তে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা আদায় করা হয় ও ৯ম শ্রেণীর রেজিষ্ট্রেশন ফি ১৬০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা আদায় করা হয়। এছাড়াও এসএসসি’র ফরম ফিলাপের ফি সাড়ে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকেন প্রধান শিক্ষক। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ফেলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন ওই প্রধান শিক্ষক। তবে মুখ চেনা প্রভাবশালীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেয় না।

স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে কথা বললে তিনি নানা অজুহাত দেখান। এছাড়াও ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষের পাশে চা দোকান করতে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটে। স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষকের বহিঃস্কারের দাবি জানান এলাকাবাসী।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. মজিবর রহমান বলেন, আমার নামে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি শাহআলম মোল্লা বলেন, একটি মহল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়াচ্ছে।

(আরকেপি/এসপি/অক্টোবর ২৪, ২০২১)