মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা সদর উপজেলার বগুড়া গ্রামের এক কৃষক দম্পতি শনিবার পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহের একটি ক্লিনিকে অপ চিকিৎসায় মরা গেছেন। এ ঘটনাটিকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা ওই দম্পতির পরিবার ও স্থানীয়রা। ওই ডাক্তার ও তার সহযোগিদের উপযুক্ত শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এ সময় তারা এ হত্যা মামলা নিয়ে টালবাহানা করলে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়ক বন্ধ করে দেয়াসহ কঠোর আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ রবিবার সকালে সরেজমিনে সদর উপজলার হাজীপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে- বাবা ঝন্টু ফকিরের বাড়ির বাইরের উঠানে ছেলে জুয়েল হোসেন (৩০) ও ভেতরের উঠানে ছেলের বৌ নাসরিন খাতুনের (২৫) এর লাশ। তরতাজা এক দুটি প্রণের একই সঙ্গে মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শোকের মাতমে মেতেছে পুরো গ্রাম।

জুয়েলের ছোট ভাই মো: রুবেল হোসেন উত্তরাধিকার নিউজকে জানান- সন্তান লাভের আশায় জুয়েল হোসেন ও তার স্ত্রী নাসরিন খাতুন শনিবার চিকিৎসা নিতে পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহে ডক্তরস ক্লিনিক নামে একটি ক্লিনিকে যান। সেখানে ডাক্তার হামিদুন্নেছা পাখি নামে এক ডাক্তার তাদের দুজনকে দুটি ইনজেকশন দিয়ে একটি ঘরের মধ্যে রাখেন। প্রায় ২ঘন্টা পর ওই ঘর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ সময় তারা নিহতদের আত্মিয়দের ফোনে জানান যে জুয়েল ও নাসরিন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। কিন্তু নিহতের পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে দেখেন দুর্ঘটনার কোন চিহ্নই তাদের শরীরে নেই। তাদের দুজনের বাম হাতের কনুইয়ের কাছে শুধু ইনজেকশনের দুটি চিহ্ন আছে। তিনি দাবি করেন তার ভাই ও ভাবিকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে। এর সঙ্গে অনেক বড় একটি অপরাধী গ্রুপ জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন।


তিনি আরো জানান- লাশ যেন ময়না তদন্ত করা না হয় এজন্যও ওই ডাক্তার ও তার সহযোগিরা চেষ্টা চালিয়েছেন। প্রভাবশালীদের চাপে এখনো পুলিশ মামলা নিয়ে গড়িমসি করছেন তিনি দাবি করেন। তিনি ওই ডাক্তারকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।

এদিকে এ ঘটনাটিকে একটি ঠান্ডা মাথার খুন দাবি করে ক্লিনিকের মালিক প্রভাবশালী ডাক্তারর পাখিকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বগুড়া-ফুলবাড়ি এলাকার মানুষ। ডাক্তার পাখির গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে তারা আজ রবিবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

বিক্ষোভকারি সবুর খানসহ অন্যরা উত্তরাধিকার নিউজকে জানান- প্রভাবশালীরা এ খুনের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ খুনের সঠিক বিচার নিয়ে টালবাহানা করা হলে তারা মাগুরা-ঝিনাইদহ মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে ১নং হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. হারুন অর রশিদ উত্তরাধিকার নিউজকে জানান- আমাদের গ্রামের নিরীহ কৃষক দম্পতিকে এভাবে খুনের ঘটনায় গোটা এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান।

(ডিসি/এএস/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৪)