এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর পাংশা চিনি ও বিভিন্ন রং মিশিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দোজাল দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে ভেজাল গুড়। এই গুড় খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে মানুষ। ভেজাল গুড় তৈরিতে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। বিভিন্নগণ মাধ্যমে সংবাদ প্রচার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুইবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও বন্ধ হয়নি কারখানাটি।

উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পাশের ডাঙ্গীপাড়া গ্রামে শেখ আলমাছ নামের এক ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ভেজাল গুড়ের কারখানা। শেখ আলমাছ মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের গবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুছ আলী মল্লিকের পেশিশক্তি কাজে লাগিয়ে স্থানীয় আফসার মোল্লার নিকট থেকে বছরে আড়াই লক্ষ টাকা চুক্তিতে পাঁচ বছরের জন্য জায়গাটি ভাড়া নিয়ে গড়ে তুলেছেন এ কারখানা। স্ত্রী মোছা. রজিনা ও সন্তানসহ কর্মচারী দিয়ে প্রায় এক বছর ধরে কারখানাটি পরিচালিত হয়ে আসছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সম্পুর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পুরাতন নষ্ট গুড়ের সাথে চিনি, বিভিন্ন রং ও ফুড কালার মিশিয়ে জাল দিয়ে গুড় তৈরী করে বাজার জাত করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কাখানার কর্মচারীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা কর্মচারীমাত্র। কারখানার মালিক আমাদেরকে যেভাবে নির্দেশনা দেন, আমরা সেই ভাবে কাজ করি।

এ সময় শেখ আলমাছের স্ত্রী মোছা. রজিনা আওয়ামীলীগ নেতা ইউনুছ আলী মল্লিককে বিষয়টি জানান এবং সাংবাদিকদের ভিডিও ও ছবি না তোলার অনুরোধ করেন। কারখানাটির অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স করা হয়েছে। আমি আর কিছু বলতে চাই না। আপনারা ইউনুছ ভাইয়ের সাথে কথা বলেন।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুছ আলী মল্লিক বলেন, আমি এই কারখানার সাথে জড়িত না। তবে কারখানার মালিক অনেক দুর থেকে এসে টাকা পয়সা খরচ করে কারখানাটি চালু করেছে। ভালো ভাবে ব্যবসা বানিজ্য করতে দেন। এটা নিয়ে লেখালেখি করার দরকার নেই।

কারখানার মালিক শেখ আলমাছ বলেন, বছর হয়নি শুরু করেছি। নিয়ম মেনেই ব্যবসা করা হচ্ছে।

বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মো. রমজান আলী বলেন, আমরা জানি কারখানাটিতে দোজাল দিয়ে গুড় তৈরী করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কারখানার নামে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। অন্য কোন নামে নিয়ে যদি কারখানা পরিচালনা করে থাকে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেনেটারী ইন্সপেক্টর ও দায়ীক্তপ্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, ইতিপূর্বে ওই কারখানাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই বার দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যে ভাবে গুড় দোজাল দিয়ে বাজারযাত করা হচ্ছে এই গুড় খেলে স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়বে মানুষ। উদ্ধতন কতৃর্পক্ষের সাথে কথা বলে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

(একে/এসপি/অক্টোবর ২৮, ২০২১)