ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের সাবেক মহকুমা প্রশাসক (বেসরকারি) বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন এর নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সিরাজগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সন্মুখে এম সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়। সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা বৃন্দ, সাবেক কমান্ডারগণ ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ফজলুর রহমান এর সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,সাবেক জেলা কমান্ডার সোহরাব হোসেন, গাজী শফিকুল ইসলাম সফি, জেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কেএম হোসেন আলী হাসান, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, আশরাফুল ইসলাম জগলু চৌধুরী প্রমুখ।

মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ইসমাইল হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবেদনে সাড়া দিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেন। সিরাজগঞ্জ থেকে বেশ কয়েকজন সহযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে রৌমারি যান। সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করেন এবং ক্যাম্প কমান্ডারের দায়িত্ব পালনকালে শতশত মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। নিজে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং দেশের মধ্যে প্রবেশ করে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সিরাজগঞ্জে এসে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন নিয়ে বেসামরিক প্রশাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠিত করা ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার পরও তার নাম গেজেটভুক্ত করা হয়নি। স্বাধীনতার কয়েক বছর পর আমেরিকা চলে যান।

আমেরিকায় বসবাস শুরু করলেও মাঝে মাঝে বাংলাদেশে এসেছেন। তার ধারণা ছিল তার নাম গেজেটভুক্ত হয়েছে। কিন্তু আজও গেজেটভুক্ত হয়নি। জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার ঘটনা সিরাজগঞ্জের সকল মুক্তিযোদ্ধা বৃন্দ অবগত রয়েছেন। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও গেজেট নাম না থাকায় তিনি ব্যথিত ও হতাশ । অবিলম্বে তার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক রিপি পেশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালে সিরাজগঞ্জ বিএ কলেজের ছাত্রলীগের নির্বাচিত জিএস সিরাজগঞ্জ জেলার মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চলা কালীন কুড়িগ্রামের রৌমারী মুক্তি যোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ১৯৭১ স্বাধীনতা পরবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলা পূর্ণগঠনে মহকুমা প্রশাসক এসডিও। সিরাজগঞ্জের অন্যতম সংগঠক সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ইসমাইল হোসেন এসডিও ইসমাইল হোসেনের নাম স্বাধীনতার ৫০ বছরে সরকারি গেজেট ভুক্ত হয়নি।

(আই/এসপি/অক্টোবর ২৮, ২০২১)