রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে শূন্য-কার্বন ভিত্তিক টেকসই উন্নয়নের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের আয়োজনে এবং পার্টিসি পেটরি রিসার্স একশান নেটওয়ার্ক (প্রান) এর সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় উপজেলার কাঁকশিয়ালী নদীর তীরে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ উপকুলীয় নারীরা এই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহন করেন। 

প্রতিবাদ সমবেশে বক্তব্য রাখেন, বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের নির্বাহি পরিচালক জান্নাতুল মাওয়া, সভাপতি জাকিয়া রাজিয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত নারী নিলুফা ইয়াসমিন, ছফুরা খাতুন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম এ দেশের বিভিন্ন জেলা জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে নানা ভাবে নানান দূর্যোগের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত করছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চল সাইক্লোন, লবনাক্ততা, বন্যা, জলাবদ্ধতা, বেঁড়িবাঁধ ভাঙনসহ নানান ভয়াবহ দূর্যোগের মধ্যে দিয়ে বেঁচে আছে। ফলে একদিকে হারাচ্ছে ভিটেমাটি ও সম্পদ। মানুষ হচ্ছে উদ্বস্তু অন্য দিকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতার সমূখীন হচ্ছে উপকূলবাসী। এখানে নারীরা আছে সব থেকে বেশি ঝুঁকির মধ্যে। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় কারন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় কার্বনডাইঅক্সাইড। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে তাই কার্বনউৎপাদনের একটা বড় অংশ হচ্ছে কার্বন ভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা এবং এর বানিজ্য। সবচেয়ে বেশি কার্বন উৎপাদক দেশ গুলো তালিকায় রয়েছে ধনী দেশ গুলি।

বাংলাদেশের অবস্থান সেখানে বহু পরে থাকলেও বিভিন্ন পরিসংখ্যন বলে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ১৯ মিলিয়ন টন কার্বনডাই অক্সাইড তৈরী করে। যার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী এনার্জি এবং বিদ্যুৎখাত। অনবায়ণ যোগ্য উৎস থেকে ক্রমাগত কার্বনডাইঅক্সাইডের মত গ্রীনহাউজ গ্যাসনির্গমন বৃদ্ধি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রাথমিক নিয়ামক। জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার, কয়লা বিদ্যুৎপ্রকল্প, মেগা প্রকল্প কারনেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েও বাংলাদেশ কার্বন উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে গন্য হয়। তারা এ সময় কার্বন উৎপাদনকারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে ক্রস চিহ্ন দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক যে কোন অবকাঠামো, কারখানা, উৎপাদন, ব্যবসা বিপনন বন্ধের দাবী জানান।

বক্তারা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সংকট মোকাবেলায় আগামী ১ থেকে ১২ নভেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬। এই কপ অনুষ্ঠানে নীতি নির্ধারন, আগামীতে করনীয় এবং দায়িত্ব বন্টন করা হবে। তাই এই প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানীকে সম্পূর্ণ বাতিল করে পুন ব্যবহার যোগ্য শক্তিতে রুপান্তরের মাধ্যমে একটি সবুজ পৃথিবীর দাবী জানান।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ২৮, ২০২১)