দিনাজপুর প্রতিনিধি : স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, স্বাস্থ্য সেবায় বাংলাদেশ অনেক দুর এগিয়ে গেছে। এজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের ফলে মা ও শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমিয়ে আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছে। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার ঘোষনা দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী।

তিনি রবিবার দুপুরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিটি জেলার হাসপাতালে সিসিই এবং আইসিইউ ইউনিট খোলা হবে। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসেবে চালুর ঘোষণা দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, ৫শয্যার হাসপাতালে যা যা সুবিধা থাকা দরকার সব সুবিধা এখানে নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে ভবন সম্প্রসারিত করে সব সুযোগ সুবিধা চালুর ঘোষণা দেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষক ও গরীব মানুষ যাতে এই দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই সবরকম চিকিৎসা সেবা পায় তা নিশ্চিত করা হবে।


তিনি বলেন, জামায়াত-বিএনপি গাড়ী পোড়াবে, মানুষকে জ্বালাবে তার বিনিময়ে আমরা জনকল্যানে চিকিৎসার জন্য তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত চিকিৎসক দেবো। জামায়াত-বিএনপি ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করবে তার বিনিময়ে আমরা জনসেবা ও দেশের উন্নয়ন করে মানুষের মন জয় করবো।

মন্ত্রী নাসিম বলেন, শেখ হাসিনার সরকার জনগণের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। তার জলন্ত উদাহরণ তৃণমূল পর্যায়ে চিকিৎসা সেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক। পৃথিবীর কোন দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম নেই। যা বাংলাদেশে রয়েছে এবং কমিউনিটি ক্লিনিক একটি মডেল হিসেবে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি লাভ করেছে। শেখ হাসিনার সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে তিনি জনগনের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে মায়ের ভূমিকায় ও বোনের স্নেহ পালন করেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি সাড়ে ৬ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের গ্রামাঞ্চলে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশ অবহেলিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের স্বাস্থ্য সেবা যাতে বঞ্চিত না হয় সেজন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি ডাক্তারদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন। সরকার আপনাদের পাশে থাকবে।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা শুধু আমি আসলেই চকচক-ঝকঝক থাকবে সেরকম নয়। হাসপাতালের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা সব সময়ের জন্য ঝকঝক-চকচক থাকে সেজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দিমেক হাসপাতালের জনবল, অবকাঠামো ও আনুসাঙ্গিক সমস্যাবলি আগামী ৬ মাসের মধ্যে সমাধান করা হবে। তিনি মেডিকেল কলেজে একটি আধুনিক ও উন্নতমানের অডিটরিয়াম ও লাইব্রেরী নির্মানের জন্য ১০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা দেন।

এছাড়াও যে সব সমস্যা রয়েছে তারও পর্যায়ক্রমে সমাধান করার আশ্বাস দেন। স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু এবং আইসিসিইউসহ অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো স্থাপন করে রোগীদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, এই এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আওয়ামীলীগ সরকারই দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালু করেছে। ইতিমধ্যে এমআরই মেশিন, সিটিস্ক্যান, কিডনী ডায়ালোসিসসহ আধুনিক বেশ কিছু যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে। এই হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু করতে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নুরুল হক, বিএমএ’র মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সনাল, রংপুর বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. নুরুজ্জামান হক প্রমুখ।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ-এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আহসান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রংপুর বিভাগের স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শওকত আলী, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কান্তা রায় রিমি, বিএমএ দিনাজপুরের সাধারন সম্পাদক ডা. গোপিনাথ বসাক, দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোশায়ের-উল আলম, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর।

এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রী দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং রোগীদের খোঁজ খবর নেন।

(এটি/এএস/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৪)