লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : লোগাগড়ায় যুবলীগ নেতা পলাশ মাহমুদ হত্যা মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। পরিবারের দাবী পলাশ হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নিহত পলাশের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে।

শনিবার বিকালে চরমল্লিকপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত যুবলীগ কর্মী পলাশের স্ত্রী জেরিন আক্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিহত পলাশের পিতা খোকন শেখ, মা পলি বেগম, বোন শিখা ও ছোট ভাই পিয়াস শেখসহ নিট আত্বীয়-স্বজনরা।

লিখিত বক্তব্যে নিহত যুবলীগ নেতার স্ত্রী জেরীন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও এলাকার আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে মামলার প্রধান আসামী মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান ও তার ভাই শরীফুল ইসলামসহ মামলার আসামীরা নিহত পলাশ মাহমুদকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। এর জের ধরে গত সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে পলাশ মাহমুদকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে আসামীরা। এ ঘটনায় নিহত পলাশের মা পলি বেগম বাদি হয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকালে লোহাগড়া থানায় মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমানকে প্রধান আসামী ও তার দুই ভাইসহ উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সজীব মুসল্লী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোল্যা ও উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল শেখসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনকে আসামী করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করা করেন। হত্যাকান্ডের পর ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি।

সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, মামলার আসামীরা মামলা তুলে না নিলে তার এক মাস বয়সী শিশু সন্তান ও পলাশের ভাই পিয়াস মাহমুদকে হত্যা করা হবে মর্মে বিভিন্ন কায়দায় হুমকি-ধামকি অব্যহত রেখেছে। তিনি পলাশ হত্যা মামলার সকল আসামীদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ সময় নিহত পলাশের মা পলি বেগম ও তার স্ত্রী জেরিনসহ আত্বীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে পলাশ মাহমুদ লোহাগড়া থেকে চরমল্লিকপুর গ্রামের রুবেল শেখের দাওয়াতে বন্ধু সুরবান,আলিমুল, ইনামুল, সাঈদীকে সাথে নিয়ে ওই গ্রামের আরেক বন্ধু ইমরানের বাড়ীতে যায়। এ সময় দূর্বৃত্তরা কৌশলে পলাশকে ডেকে নিয়ে রাস্তার পাশে ইমরানের দোকানের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মুখ,মাথা, ঘাড় ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়ী ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী পলাশকে উদ্ধার করে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন । পলাশ চর মল্লিকপুর গ্রামের খোকন শেখের ছেলে এবং উপজেলা যুবলীগের একজন কর্মী।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হেনা মিলন জানান, মামলার এজাহারভূক্ত আসামীরা পলাতক রয়েছে, তাদের আটকের জন্য জোর চেষ্টা চলছে।

(আরএম/এসপি/অক্টোবর ৩০, ২০২১)