নওগাঁ প্রতিনিধি : আসন্ন শারদীয় দূর্গাপুজো ও ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলার মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বেশ কয়েক কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছে। ইতোমধ্যেই জেলার মাদক পয়েন্টগুলো স্বক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন মাদক পয়েন্টগুলোতে নতুন নতুন অচেনা মুখের আনাগোনা শুরু হয়েছে।

সরবরাহ বৃদ্ধি ও মজুত গড়ে তুলতে ব্যস্ত সিন্ডিকেটরা। আর এই সব কিছুই হচ্ছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যক্ষ যোগসাজসে। সীমান্ত পেরিয়ে আনা হচ্ছে, ফেনসিডিল, হেরোইন, নেশাজাত ইনজেকশন, গাঁজা, ইয়াবাসহ নানা প্রকার মাদক সামগ্রী।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওগাঁ জেলার ধামইরহাট ও সাপাহার সীমান্ত গলিয়ে প্রতিদিন আসছে ভারতীয় ফেনসিডিল, নেশাজাত ইনজেকশন, ইয়াবা, হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। এসব মাদক দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুত করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। নওগাঁ সদরের কীর্তিপুরের শালেহবাজ গ্রামে চলছে মাদকের জমজমাট ব্যবসা। বদলগাছীর জগোপাড়া ও ভান্ডারপুরে বেশ কিছু বাড়িতে তৈরি করা হচ্ছে চোলাই মদ। মান্দা উপজেলার সতিহাট ঋষিপাড়াতে নিয়মিত তৈরী করা হচ্ছে চোলাই মদ। জেলায় এই ঋষিপাড়া পয়েন্টকে চোলাই মদের ডিপো বলা হয়ে থাকে। সেখানকার চোলাই মদগুলো জেলার অন্যান্য স্থানের পাশপাশি নওগাঁ সদরের নুনিয়াপাড়া সংলগ্ন সুইপার কলোনী এলাকায় আনা হয়। সেখানকার বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ী রীতিমত চোলাই মদ বিক্রি শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অপরদিকে নওগাঁ পৌর এলাকার খিদিরপুর মহল্লার আলফার মোড়ে প্রতিদিন হেরোইন, ফেনসিডিল আর নেশাজাত ইনজেকশনের যেন হাট বসে। সেখানে পুকুরের চারপাশে এবং মোড়ের দোকানপাটের অলিতে-গলিতে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে মাদক বেচা-কেনা ও সেবন। স্থানীয় কতিপয় বয়লার ও অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সক্রিয় মদদে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মাদক সরবরাহ করলেও মাদক সেবীর বেশীর ভাগই হলো বড়লোকের বখে যাওয়া ও মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুনরা। এছাড়া পিরোজপুর পশ্চিমপাড়া এবং উত্তরপাড়ায় শিশুবাগান সংলগ্ন এলাকায় নেশাজাত ইনজেকশনের ব্যবসা ফের জমে উঠেছে।

ফেনসিডিল ও চোলাই মদ জেলা শহরে ভয়াবহ আকার ধারন করতে বসেছে। স্কুল কলেজের ছাত্ররাও হাতের নাগালে এসব মাদকদ্রব্য পাওয়ায় আশঙ্কাজনকভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। স্থানীয় সচেতন লোকজনের অভিযোগ, মাঝে মধ্যে পুলিশ এবং র‌্যাব জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান ফেনসিডিল ও চোলাইমদ উদ্ধার করলেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শুধু মাসোহারা নিতেই ওইসব পয়েন্টগুলোতে চোখে পড়ে।

(বিএম/এএস/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৪)