রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : সংবাদ প্রকাশের জন্য থানায় তথ্য নিতে যাওয়ার অপরাধে দৈনিক মানবজমিনের রাজিবপুর প্রতিনিধি আলতাফ হোসেনের উপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন মহল। তারা অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেছেন। আজ মঙ্গলবার রৌমারী ও রাজিবপুর প্রেসক্লাব পৃথক পৃথকভাবে মানববন্ধন মৌনমিছিল ও স্বারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজিবপুর আ’লীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হাই ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, যারা সাংবাদিকদের উপর হামলা করে তারা আমাদের দলের কেউ নয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জরুরী বৈঠক দিয়ে তাকে (কিবরিয়া) বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হবে। আরও নিন্দা জানিয়েছেন রাজিবপুর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল আলম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো, সংগঠনিক সম্পাদক কামরুল আলম বাদল, বিএনপি সভাপতি অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান, রৌমারী আ’লীগ সভাপতি আজিজুল হক সরকার, সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল ইসলাম মিনু, বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাহেদ হোসেন সোনাসহ রৌমারী রাজিবপুরের সকল সাংবাদিক, সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, রাজিবপুর থানা ভবন থেকে ১০০ গজ দুরে জনৈক অমেলা বেগমের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেয় রাজিবপুর আ’লীগের সদর ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়াসহ তার সহযোগি মাসুদ, মুকুল, ফারুক ও সুজন। বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ দেয় নির্যাতিত ওই পরিবারটি। এ তথ্যটি নেয়ার জন্য সাংবাদিক আলতাফ হোসেন থানায় যান। এ কারণে তাকে ডেকে নিয়ে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে বেধরক মারপিট করা হয়।

সাংবাদিক আলতাফ হোসেন জানান, থানামোড়স্থ আমার ব্যক্তিগত অফিস থেকে ল্যাপটপ ও ক্যামেরা ছিনতাই করে নিয়ে যায় কিবরিয়ার লোকজন। পরে মুঠোফোনে আমাকে বলে আপনার সব দেয়া হবে আপনি মামুনের দোকানে আসেন। আমি সেখানে গেলে তারা কৌশলে ওই দোকানের দোতলায় নিয়ে যায় এবং সেখানে আগে থেকেই পরিকল্পিতভাবে মাসুদ, মুকুল ফারুক ও সুজনকে নানা অস্ত্রেশস্তে সজ্জিত করে রাখে। এটা আমি জানতাম না।

আমি সেখানে যাওয়া মাত্রই তারা জরোজা জানালা লাগিয়ে দিয়ে মুকুল আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে রাখে এবং অপরাপর সবাই বৈদ্যুতিক তার দিয়ে এলোপাথারি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে কিবরিয়া আমার গলায় বৈদ্যুতিক তার পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে আর বলে তোকে আজ মেরেই ফেলবো। মারপিটের পর তারা এ ঘটনা যাতে পত্রিকায় না আসে সেজন্য আমাকে হুমকি দেয়। মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলে পত্রিকায় সংবাদ এলে তোর আর রক্ষে নেই।

সাংবাদিক আলতাফ হোসেন নিরাপত্তাজনিত কারণে রৌমারী হাসপাতালের ৭নং বেডে কাৎরাচ্ছেন। তার অবস্থা আশংকাজন। রৌমারী হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন জানান, তার অবস্থা গুরুতর। চোখ, মাথা ও শ্বাসলানিতে জখম রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নেয়া দরকার।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে রাজিবপুর থানায় এজাহার দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, তদন্ত চলছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(আরআইএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪)