স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক বডি সিন্ডিকেট। সোমবার রাতে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় তাকে বরখাস্ত করা হয়।সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বহিষ্কার করে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে আমরা সন্তুষ্ট নই’ উল্লেখ করে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষককে আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন। এ জন্য তারা সাত দিনের সময় বেধে দিয়েছেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।

সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, খুব দ্রুতই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বরাবর চার্জশিট পাঠান হবে।

আজীবন বহিষ্কার করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম যে ঘটনা ঘটিয়েছেন সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মান ক্ষুণ্ন করেছে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের মধ্যে থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে তিনি সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার মতো অপরাধ করেছেন।

এরআগে বিকালে চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক ড. সাইফুল। একই সাথে শিক্ষক হিসেবে ছুটিতে থাকার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর তিনি একটি চিঠিও লিখেন। সোমবার দুপুর দেড়টায় তিনি এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

এর আগে ছাত্রীকে যৌন হায়রানীর অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাইফুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করেছে বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। সম্প্রতি এক ছাত্রীকে বেশি নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানী করেছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সোমবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। এখন পর্যন্ত তিনি অবরুদ্ধ আছেন। শিক্ষার্থীরা তাকে আজিবন বহিস্কারের দাবি জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এএম আমজাদ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছেন।

জানা গেছে, অনুষদের চেয়ারম্যান ড.সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছে তারই অনুষদের ৪র্থ বর্ষের এক ছাত্রী। ওই নির্যাতিত ছাত্রী জানায়, তাকে বেশি নাম্বার দেবার প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে নিয়ে যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করেছেন ওই শিক্ষক।

পরে এই ঘটনা জানাজানি হলে ওই ছাত্রীর সহপাঠিরা চেয়ারম্যানকে অনুষদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.এম আমজাদ আলী বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি। আর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ভিসির সাথে কথা বলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

(ওএস/অ/সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪)