আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : শখ করে ২০১৮ সাল থেকে দুইটি দুম্বা ও চারটি ছাগল পালন শুরু করেন রেজাউল করিম বাদল। বর্তমানে তার খামারে ৫৬টি র্টাকি প্রজাতির দুম্বা এবং ব্লাক বেঙ্গল, তোতা পাড়ি, বৃটল, গুজরী ও স্বজাতসহ ছয় প্রজাতের দুই শতাধিক ছাগল রয়েছে।

বরিশাল নগরীর জিয়া সড়কের লোহারপুল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিম বাদলের আগে লাইব্রেরীর ব্যবসা ছিলো। সে সময় সংসারে অর্থনৈতিক সংকট লেগেই ছিল। বর্তমানে বাদল অর্থনৈতিকভাবে হয়েছেন স্বাবলম্বী। কঠোর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে বাদল এখন সমাজের একজন প্রতিষ্ঠিত সফল উদ্যোক্তা।

রেজাউল করিম বাদল বলেন, তার খালাতো ভাই শহিদুল ইসলামের উৎসাহে প্রথমে মেহেরপুর থেকে দুইটি দুম্বা ও খুলনা থেকে চারটি ছাগল ক্রয় করে এনে খামার তৈরী করেন। বর্তমানে তার খামারে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার দুম্বা ও ছাগল রয়েছে। তার খামার থেকে তিন মাস পর পর আয় হয় প্রায় ছয় লাখ টাকা। পাশাপাশি তার খামারে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ছয়জন শ্রমিক।

বাদল আরও বলেন, আমার স্বপ্ন রয়েছে আগামী ১০ বছর পর প্রতিটি ঈদে নগরীর প্রায় ২০ ভাগ বাসিন্দার বাসায় দুম্বা পৌঁছে (অর্ডারের মাধ্যমে সাপ্লাই) দেবার। বাদল আরও বলেন, টার্কি জাতের এসব দুম্বা ছয় মাস পর পর বাচ্চা প্রসব করে। সেই বাচ্চাগুলো আট থেকে দশ মাসের মধ্যে ৮০ থেকে ১২০ কেজি ওজনের হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়। দুম্বা পালনে বাড়তি তেমন কোনো খরচ হয়না। ফলে দুম্বা পালনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে খামারটি আকারে আরও বড় করে পূর্ণাঙ্গ একটি দুম্বার খামারের স্বপ্ন রয়েছে বাদলের।

ছাগল ও দুম্বা পালনে ভিন্নতা না থাকায় আলাদা করে রাখার প্রয়োজন হয়না জানিয়ে বাদল আরও বলেন, ছাগল ও দুম্বাকে এক সাথেই খাবার খাওয়ানো হয়। সকাল, দুপুর ও বিকেলে ঘাসের পাশাপাশি গম ও ভুট্টার ভূষি খাওয়ানো হয়। দুম্বা ও ছাগলের খামারে ভ্যাকসিনসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করেছেন প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেতে কিছুটা বিলম্ব হয় বলেও তিনি (বাদল) উল্লেখ করেন।

বুধবার দুপুরে বরিশাল বিভাগীয় প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ নুরুল আলম বলেন, দুম্বা মূলত মরু অঞ্চলের প্রাণী। দুম্বায় তুলনামূলক রোগবালাই কম। বরিশালের পরিবেশ ও আবাহাওয়া দুম্বা পালনের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ খাতে নতুন করে আর্থিক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুম্বা পালন একটি লাভজনক পেশা। দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল কাছাকাছি প্রাণী। পাশাপাশি দুম্বার খামার করতে কোন ঝুঁকি নেই।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ২৪, ২০২১)