এমদাদুল হক স্বপন, ঝালকাঠি : লাইসেন্সের মেয়াদ ২ অর্থবছর নবায়ন না করা এবং সরকারী অনুমোদন ব্যতিত ঝালকাঠির স্কয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) এ আদেশ জারী করলেও তা উপেক্ষা করে পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বহাল তবিয়তেই চালিয়ে যাচ্ছে স্কয়ার কর্তৃপক্ষ। স্কয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন না করা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী।

চিঠিতে নির্দেশনায় তিনি উল্লেখ করেন, স্কয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গত ২০১৯-২০২০ লাইসেন্স নবায়ন থাকলেও ২০২০-২০২১ অর্থবছর হতে এখন পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন না করায় সরকারী আইনকানুন না মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হচ্ছে। লাইসেন্স বিহীন এবং সরকারী অনুমোদন ব্যতিত এ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা সম্পুর্ণ আইন পরিপন্থি। লাইসেন্স নবায়ন না করা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলো।

জানা গেছে, সরকারী নিয়ম অমান্য করে সরকারী হাসতাপাল থেকে ৫০গজের মধ্যেই গড়ে ওঠা স্কয়ার ক্লিনিক। জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন দপ্তর স্কয়ার ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষকে ডেকে বিধি অনুযায়ী পরিচালনার নির্দেশ দিলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চিকিৎসা সেবার নামে শুরু করে ব্যবসা কার্যক্রম।

স্কয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা চেয়ারম্যান এডভোকেট মুন্সি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়ম-কানুন অনেক কিছুই বুঝি না। তাছাড়াও ভবন মালিক কালাম খন্দকারের অশোভন আচরণে সম্মান বাঁচাতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেই।

পরিচালক মো. ইউসুফ আলী হাওলাদার জানান, ভবন মালিক মো. কালাম খন্দকার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে মালিকানা অংশীদার থাকলেও তিনি ক্লিনিকের কেউ না। তারপরেও উনি ক্লিনিকে অবাধ বিচরণ করে একক আধিপত্য বিস্তারের প্রভাব দেখানোয় আমাদের কোণঠাসা করেছে। তাই আমরা কয়েকজন মালিকানা অংশীদার ২ বছর পুর্বে থেকে নিস্ক্রিয় হয়েছি। যারা পরিচালনা করেছে তারা নবায়ন না করায় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরো জানান, লাইসেন্স নবায়নের জন্য তাগিদ দিলেও কালাম খন্দকার দম্ভোক্তি করে বলতেন নবায়ন লাগবে না, সিভিল সার্জনকে টাকা দেই। এভাবে টাকা দিলে ২বছরেও টাকা না দিলে কিছু হবে না।

ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স আমার নামে থাকায় তা মেয়াদোত্তীর্ন হওয়ায় আমার নামে নোটিশ এসেছে। ক্লিনিকেই যেতে পারছি না, নবায়ন করব কিভাবে?

ডা. নওশের আলি বলেন, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার অংমিদার ১৫জন ও ক্লিনিকের অংশিদারি মালিক ১৩জন। মালিক কালাম খন্দকার শুধু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকানায় অংশিদার রয়েছে। ভবন মালিক প্রভাব বিস্তার করে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অর্জিত আয় একাই ভোগ করছেন। সার্বক্ষনিক পরিচালনায় থাকা অন্য মালিকদের বের করে দিয়েছেন। দু'দফা বৈঠক হলেও সেচ্ছাচারিতায় কোন সুরাহা হয়নি।

এ বিষয়ে কালাম খন্দকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যপাওে মোবাইলে কোন কথা বলা যাবেনা, আমি সকল ডাটাসহ আপনার সাথে যোগাযোগ করবো’।

সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী জানান, ১৫তারিখে বন্ধ করার পরে স্কয়ার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অনলাইনে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। তদারকিতে থাকলেও তাই আর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। নবায়নের জন্য কে আবেদন করেছে? তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।

(এস/এসপি/নভেম্বর ২৮, ২০২১)