মাটির নিকটবর্তী মানুষের কাছে

আমি তোমাদের জন্য সহজভাবে সহজ কথা লিখতে চাই
কেবলমাত্র কবির জন্য কবিতা, এ কথা আমি মানি না
কবিতা- কবির জন্য, কবিতা গণমানুষের জন্য
কবিতা- সকলের জন্য পাঠযোগ্য বোধগম্য করে তুলতে চাই

কবিতা- পা ফাটা, খেটে খাওয়া মানুষের জেগে ওঠার জন্য
কবিতা- তাদের কাছে নিয়ে যেতে চাই
কবিতা- কুলি মজুরের কাছে নিয়ে যেতে চাই
কবিতা- পোষাক শ্রমিকের কাছে নিয়ে যেতে চাই
কবিতা- জেলে-কামার-কুমার আর তাঁতীর কাছে নিয়ে যেতে চাই
কবিতা- কারখানার পেশীবহুল যুবকের কাছে নিয়ে যেতে চাই
কবিতা- মাটির নিকটবর্তী মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চাই
কবিতায় জাগিয়ে তুলতে চাই প্রেম, দ্রোহ জীবনের জয়গান আর বিপ্লবের চেতনা।


মৃত্তিকা

মাটির সোঁদা গন্ধে বেড়ে ওঠা কৃষকের মল্লভূমি
মুখের সরল হাসি আকাশের জোছনায়
আলো বিকিয়ে দেয়। কোন এক পদ্মার চরে
কাশফুলের ধবল মখমলে আচ্ছন্ন রাখালের শরীর
কলমিলতার মতো কিষাণীর পুরু বাহুমূল জড়িয়ে
চোখে ঝলসে ওঠে হাসির ঝিলিক; পদ্মার চকচকে
রূপালী ইলিশ, নায়ের গলুই চুয়ে পড়ে আনন্দলহরী।

বান আসে বান যায় জেগে ওঠে অজস্র চরাঞ্চল
বুকের জমিনে বাড়তে থাকে অঙ্কুরিত আবাদি ফসল
জেগে ওঠে কামুক শরীর জেগে ওঠে উতাল হাওয়া
দখল বাড়তে থাকে হাত বদল হয় জমিন শুষে নেয়
লোনা ঘাম আর ভেজা রক্ত; সেই সাথে মানুষের
রক্ত শুষে জমির কামজ্বর বেড়ে যায়।


শব্দেরা ঝরে পড়ে

কবিতার বিমূর্ত অক্ষরগুলো শব্দের ঝরাপাতা হয়ে
বসন্তের দোরগোড়ায় ঝরে পড়ে।

প্রকৃতি খোলস পাল্টে নিদারুণ ব্যর্থতায় হাহাকার করে।
জেগে ওঠে পাখির কলতান, জেগে ওঠে প্রাণহীন গাছ
মাছেরা বেড়াতে আসে গেরস্থের বাড়িতে।
নারীর শরীরের ভাঁজে ভাঁজে অন্য রকম আচ্ছাদন
ভেসে আসে ফুলেল সম্ভাসনে।

রাতের আকাশ থেকে ছুঁড়ে ফেলা একমুঠো জ্যোৎস্না
কার্নিশ ছুঁয়ে জানালার কাঁচের দেয়াল ভেদ করে
তোমার কামার্ত শরীরের ভাঁজে ভাঁজে আন্দোলিত করে।

আমি তোমার নগ্নময় কবোষ্ণ শরীরের প্রতিটি লোমকূপে
হাতের ছোঁয়ায় সুড়সুড়ি দেই, মিশে যাই সাগর সঙ্গমে।