আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পর্যটকদের জন্য পুনরায় নিজেদের সীমান্ত খুলে দিলো দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্র ফিজি। প্রায় দুই বছর পর বুধবার (১ ডিসেম্বর) প্রথম বারের মতো আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের প্রবেশের অনুমতি দিলো দেশটি। ফলে এখন থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীরা আবারও ফিজির বিভিন্ন দ্বীপে ভ্রমণের সুবিধা পাবেন।

পর্যটন খাতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল ফিজি। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে দেশটির পর্যটন খাতে ধস নেমেছে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের মার্চে সব আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয় ফিজি। করোনা মহামারি যেন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে না পারে এবং হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমাতেই এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

তবে এখন করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে এই দ্বীপরাষ্ট্র। এরই মধ্যে তারা প্রায় ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে পরিপূর্ণ ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। নিজেদের সীমান্ত খুলে দিলেও অল্প কিছু দেশের জন্য ভ্রমণ সুবিধার অনুমতি দিচ্ছে দেশটি। কিন্তু তারপরেও পর্যটন খাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

ফিজির পর্যটন কোম্পানি তেওয়াকার পরিচালক জেমস সোয়ানে বলেন, দীর্ঘদিন পর ফিজি এয়ারওয়েজের ফ্লাইটগুলোতে যাত্রীদের ভিড় এবং পর্যটকদের স্বাগত জানানো আমাদের জন্য বেশ আনন্দের বিষয় ছিল। এটি একটি দুর্দান্ত অনুভূতি এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে সেখানে থাকতে পেরে বেশ আনন্দিত।

যেসব পর্যটকরা ফিজিতে পৌঁছাবেন তাদের তিন রাত অনুমোদিত রিসোর্টে থাকতে হবে এবং ক্রমাগত পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তারা হোটেলের মধ্যে বার এবং রেস্তোরাঁসহ নির্দিষ্ট এলাকাগুলোতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।

ফিজিতে জনসংখ্যা ১০ লাখের মতো। বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও এই দ্বীপ রাষ্ট্রে নতুন করে পর্যটকদের জন্য দুয়ার খুলে দেওয়াটা অর্থনীতির জন্য বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ৪০ শতাংশই আসে পর্যটন খাত থেকে। দেশটিতে করোনা মহামারির কারণে পর্যটন খাতে ধস নেমে আসায় প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছেন।

সম্প্রতি করোনার ওমিক্রন ধরন শনাক্তের পর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণে বিধিনিষেধ বা কড়াকড়ি জারি করতে শুরু করেছে। এর মধ্যে ফিজি পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ায় কিছুটা শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। কারণ ফিজির প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজনের দেহে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

পর্যটকদের স্বাগত জানিয়েছেন ফিজির প্রধানমন্ত্রী ফ্রাংক বাইনিমারামা। তিনি ভ্যাকসিনের দুই ডোজই সম্পন্ন করেছেন।

এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাংক বাইনিমারামা বলেন, আমরা বেশ গর্বিত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রায় দুই বছর পর ফিজিতে আসা প্রথম পর্যটকদের স্বাগত জানাতে আমরা প্রস্তুত। পরিপূর্ণ ভ্যাকসিন নেওয়া এবং করোনার পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়েছেন এমন ভ্রমণকারীর জন্য আমাদের সহজ বার্তা হচ্ছে, আমাদের দেশে আপনাদের স্বাগতম।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ০৩, ২০২১)