শেরপুর প্রতিনিধি : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় উচ্চ আদালতে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদন্ডের রায়ের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদন্ডের রায়ে শেরপুরের নাগরিক সমাজ ‘ক্ষুদ্ধ’ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। উচ্চ আদালতের এ রায়ে নাগরিক সমাজ ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রগতিশীল ব্যক্তিবর্গ বলেছেন-রায়ে আমরা হতাশ, বিক্ষুদ্ধ।

কেউ কেউ এ রায়কে সরকারের সাথে জামায়াতের আঁতাতের রাজনীতির ফল বলে উল্লেখ করেছেন। অনেকেই আবার সরকারের ওপর বিদেশী শক্তির প্রভাব ও চাপের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, চাপে পড়েই সরকার এমন রায় দিতে আদালতকে প্রভাবিত করেছেন। নিউমার্কেট সংবাদিক বিপ্লবী রবি নিয়োগী সভাকক্ষ পরিচালনা পর্ষদ এক বিবৃতিতে সাঈদীর রায়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেছে, এর দ্বারা যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেনো মানুষ সাক্ষ্য দিতে যাবে।

এ রায়কে আাঁতাতের রায় হিসেবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এতে সরকারের কোন দিকেই লাভ হবে না। বরং সরকারকে এজন্য সামনে যথেষ্ট মুল্য দিতে হবে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট প্রদীপ দে কৃষ্ণ বলেন, আমি আশা করেছিলাম। উচ্চ আদালতের সাঈদীর মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল থাকবে। কিন্তু এ রায়ে আমি হতাশ, বিক্ষুদ্ধ। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে। সাঈদীর বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযোগইতো রয়েছে। নারীদের পাক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া, লুন্ঠন, হত্যা, হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করা, কোন অভিযোগ নেই তার বিরুদ্ধে।

জেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন বলেন, আমি এ রায় কোনমতেই মানতে পারছি না। নিশ্চয় সরকারের সাথে জামাতের কোন ধরনের রাজনৈতিক আঁতাত হয়েছে, না হলে এমন রায় হতে পারেনা। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রবীণ শিক্ষাবিদ মুহম্মদ মহসীন আী বলেন, সরকারের ওপর বিদেশী শক্তির চাপ থাকতে পারে। সেই চাপেই এ ধরনের রায় হতে পারে। যতোই বলা হোক বিচার বিভাগ স্বাধীন। কিন্তু এ রায় সে ধারনার মর্মমুলে আঘাত করেছে। এ রায়ে আমরা মর্মাহত।

উদীচী শেরপুর জেলা সংসদের সদস্য এসএম আবু হান্নান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক বলেছেন, কিভাবে, কেমন করে এমন রায় হলো, কিছুই বুঝে ওঠতে পারছিনা। এ রায়ে আমরা দারুনভাবে হতাশ এবং ক্ষুদ্ধ। মনে হয়, এর পেছনে কোন ধরনের গোপন সমঝোতা রয়েছে। কিন্তু সেরকম কিছু হলে এর ফল কোন দিনও ভালো হবেনা। কারণ স্বাধীনতা বিরাধী শক্তি এখন ঘাপটি মারলেও ঠিকই তারা সময়মতো বদলা নেবে।

(এইচবি/এটিআর/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৪)