রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ১৯৭১ সালে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলার ৩৩৫ জন মানুষ ভারতে যাওয়ার সময় বৃষ্টির কারণে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিলে তাদেরকে পাক সেনা ও বাংলাদেশের রাজাকার আলবদররা তাদেরকে ধরে দীণেশ কর্মকারের বাড়ির পিছনে নৃশংসভাবে হত্যা করে সেখানে লাশ দাফন করে। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সেই বধ্যভূমিটি সংরক্ষতিত হয়নি। অবিলম্বে দীনেশ কর্মকারের বাড়ির বধ্যভূমিসহ সাতক্ষীরার সকল বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও কেন এসব নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। প্রতি বছর  স্মারকলিপি দেওয়া হচ্ছে আর বধ্যভূমি দখল হচ্ছে এটা মেনে নেওয়া হবে না। আগামি ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের মধ্যে যদি বধ্যভূমি সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকার উদ্যোগ  না নেয় তাহলে বৃহত্তর কর্মসুচি গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে গণমুখী ফুটবল ময়দানে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

’৭১ এর বধ্যভূমি ও স্মৃতি সংরক্ষন কমিটি আয়োজিত আলোচনায় সভায় সভাপত্তিব করেন মুক্তিযোদ্ধা সাবেক অধ্যক্ষ সুভাষ সরকার। বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবু আহম্মেদ, সাংবাদিক সুভ্ষা চৌধুরী, জজ কোর্টের সাবেক পিপি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড, ওসমান গণি, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, সাংবাদি আবুল কালাম আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা নুরুল আলম. মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সুশাস্ত ঘোষ, বাসদ নেতা নিত্যানন্দ সরকার, অ্যাড খগেন্দ্রনাথ ঘোষ, জাসদ নেতা সরদার কাজেম আলী, প্রভাষক ইদ্রিস আলী, আওয়ামী লীগ নেত্রী লায়লা পারভিন সেঁজুতি, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, শরিফুল­াহগ কায়সার সুমন, আমেনা বিলকিস ময়না, মন্ময় মনির, কৃষক লীগ নেতা মঞ্জুর হোসেন, গণফোরাম নেতা আলী নূর খান বাবুল প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে দীণেশ কর্মকারের বাড়ির পাশের বধ্যভূমিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।

অপরদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবং সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপীর নেতৃত্বে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও আনছার ব্যাটেলিয়ন পৃথক পৃথক ভাবে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কস্থ শহীদ মিনারে পুষ্প মাল্য অর্পন করেন। এ সময় বাংলাদেশকে মেধা শূন্য করতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী রাজাকার আল-বদর আল-শামসদের হাতে নির্মম ভাবে নিহত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং অঙ্গীকার করা হয় শহীদদের চেতনা বুকে ধারন করে আগামি দিনে সোনার বাংলা গড়ার।

পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়ের উপ-পরিচালক মাশরুবা ফেরদৌসের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তানজিল্লুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা বি.এম আব্দুর রাজ্জাক, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সাধারন সম্পাদক মোহাম্মাদ আলী সুজন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল-মামুন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন প্রমুখ।

এ ছাড়া মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় পলাশপোলে সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের আয়োজনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সাংবাইদক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবু আহম্মেদ, অ্যাড, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।


(এসএস/এএস/ডিসেম্বর ১৪, ২০২১)