রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : রাতের আঁধারে এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষকের বিভিন্ন প্রজাতির নয়টি গাছ কেটে, প্রাচীর ও কাঠঘর ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিকার না হওয়ায় প্রতিপক্ষরা বেড়া দিয়ে ওই স্কুল শিক্ষকসহ তিনটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায়  মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার উত্তর দেবনগর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নিরঞ্জন কুমার দাশ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। ভারপ্রাপ্ত বিচারক জিয়ারুল ইসলাম তদন্ত করে আগামি ৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলেন জন্য সাতক্ষীরা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামীরা হলেন সরোজিৎ দাশ, তার স্ত্রী আন্না রানী দাশ, রণজিৎ কুমার দাশ, সুব্রত দাশ, কাজল দাস, সুদেব দাশ ও বাসুদেব দাশ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯২ সালে জমি কিনে সেখানে বাড়ি বানিয়ে শরীক সরোজিৎ দাশের বাড়ির পাশ দিয়ে ও দুর্গা মন্দিরের পিছন দিয়ে মেইন রাস্তায় উঠতেন নিরঞ্জন দাস। একই পথ ব্যবহার করতেন শরীক লব দাশ ও কুশ দাশ। কয়েক বছর আগে প্রতিবেশি শিক্ষা কর্মকর্তা পরিতোষ দাশের সহায়তায় রণজিৎ, সুব্রত ও কাজল মন্দিরের পিছনে প্রাচীর দিয়ে তার যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি রণজিৎ, সুব্রত ও কাজল তার জমির উপর দিয়ে ট্রলি ঢোকানোর জন্য বিনা মূল্যে ছয় ফুট করে চওড়া ও ১৫০ ফুট লম্বা রাস্তা দাবি করে আসছিল তার কাছে। তিনি জমি দিতে রাজী হননি। পেশাগত ও শিক্ষা লাভের কারণে তার দু’ ছেড়ে বাড়িতে থাকে না। এ সূযোগে ২৬ নভেম্বর রাত আটটার দিকে প্রতিবেশি রণজিৎ দাশ, তার স্ত্রী আন্না রানী দাশ, তাদের ছেলে কাজল দাশ, সরোজিৎ দাশের ছেলে সুব্রত দাশ ও পাগল দাশের ছেলে সুদেব দাশ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে দা, কুড়াল নিয়ে তার জমিতে লাগানো চারিট নারিকেল গাছ, দু’টি আমগাছ ও তিনটি মেহগণি গাছ কেটে সাবাড় করে দেয়। আরো কয়েকটি গাছের গোড়া অর্ধেক কেটে রেখে চলে যায়। চলে যাওয়ার আগে তারা ইটের প্রাচীর ও কাঠ রাখার ঘর ভেঙে ফেলে। গাছ কাটতে বাধা দেওয়ায় তাকে ও তার স্ত্রী শিবানী রানী দাশকে লাঞ্ছিত করা হয়। হামলাকারিরা বাদির দু’ লক্ষাধিক টাকার গাছপালা কেটে নষ্ট করে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

মামলার বিবরণে আরো জানা যায়, থানা কোন প্রতিকার না করায় ৫ ডিসেম্বর সকাল সাতটার দিকে সরোজিৎ দাশ, রনোজিৎ দাশ, আন্না রানী দাশ বাসুদেব দাশ, সুদেব দাশ, সুব্রত ও কাজল দাশসহ কয়েকজন তার জমির পূর্ব পশ্চিম ও উত্তর পাড়ের দিকে জিওল গাছের কচা পুতে তাতে মশারির নেট লাগিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। ফলে তিনিসহ লব ও কুশের পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এতে লব ও কুশ দাশের ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এমনকি আসামীরা জোরপূর্বক ওই জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা অব্যহত রেখে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. জিয়াউর রহমান জিয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

(আরকে/এএস/ডিসেম্বর ১৪, ২০২১)