হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ বিভিন্ন সংগঠন নিহতদের স্মৃতি উদ্দেশ্যে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রাম কৃষ্ণপুরে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানী হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসররা।

ওইদিন ভোর ৫টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গণহত্যা লুন্ঠন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে নারকীয় তান্ডব চালায় হানাদার বাহিনী। ভোরবেলা গ্রামবাসী কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হানাদার বাহিনী, স্থানীয় রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্যবৃন্দসহ দশ থেকে বার জন পাকিস্তানী সেনাসদস্য অষ্টগ্রাম ক্যাম্প থেকে স্পীডবোটে গ্রামে প্রবেশ করে গ্রামগুলোর চারদিক ঘেরাও করে কৃষ্ণপুর, গদাইনগর, চন্ডিপুরের লোকজনকে ঘুম থেকে তুলে এনে কৃষ্ণপুর গ্রামে মৃত ননী গোপাল রায়ের বাড়ির পুকুরের ঘাটলা সংলগ্ন পাকা জায়গায় ও গদাইনগর গ্রামের চিত্তরঞ্জন দাশের বাড়ির উঠানসহ চন্ডিপুর গ্রামের তিনটি স্পটে একত্রিত করে ব্রাশফায়ার করে ১২৭ জনকে গণহত্যা করে। এতে করে বলভদ্র নদী বেষ্টিত গ্রামগুলো শ্মশানে পরিণত হয়।

এলাকাবাসী আজও ভুলতে পারেনি সেই দিনের বিভীষিকাময় ঘটনা। আজও ননী গোপাল রায়ের বাড়ির টয়লেটের দেয়ালে, বাড়ির পাশের দুর্গা মন্দিরের দেয়ালে গুলির ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে সেই ভয়ানক হত্যাযজ্ঞের স্মৃতি। স্বজন হারানোর বেদনায় অশ্রুসিক্ত স্বজনরা এখনো তাদের পরিজনদের হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। স্বাধীনতার অনেক বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যাকান্ডের বিচার না পেয়ে হতাশ নিহতের স্বজনরা।

(পিডিএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৪)