রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা শহরের বহুল আলোচিত ধোপাপুকুরের পাড় বাঁধানোর নামে ভূমিদস্যুদের ভরাট করার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সোমবার বিশেষ সতর্কীকরণ বোর্ড টানিয়ে এ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, বহুকাল আগে থেকেই সাতক্ষীরা পৌরসভার সরকারপাড়া এলাকার ব্যক্তিগত এই পুকুরটি ধোপাপুকুর নামে পরিচিত। খননের পর থেকে ধোপাপুকুরটি এলাকার বাসিন্দারা ব্যবহার করে আসছিলেন। এখন থেকে প্রায় বছর দশেক আগে পুকুরটি কিনে নেন জলিল মোল্লা নামের জনৈক ব্যক্তি। কিছুদিন পর পুকুরটির চারপাশে উঁচু প্রাচীর দিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে রাখা শুরু করেন তিন। তবে এসময় পুকুরে মাছ চাষ করা চলছিল। পুকুরটি ক্রয়ের সময় তারা জানিয়েছিলেন, পুকুরটি সর্বসাধারণের জন্য আগের মতোই উন্মুক্ত থাকবে। কিন্তু তারা পুকুরটি উন্মুক্ত না রেখে মৎস্য চাষে ব্যবহার করে আসছেন।

তারা আরো জানান, পুকুরের মালিকপক্ষ পুকুরের পাড় তৈরীর নামে গত ২৯ নভেম্বর সাতক্ষীরা ভূমি অফিসের একটি অনুমতি লাভ করে। প্রকৃতপক্ষে পুকুরটির কোন পাড় নেই। ভেতরে পানি এবং পানির গা দিয়েই সুউচ্চ প্রাচীর। পাড় বলতে প্রাচীরের বাইরে বোঝায়। কিন্তু সেখানে তাদের কোন জায়গা নেই। এমন অবস্থায় কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে পুকুরের ভেতরে পাড় ভরাটের নামে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। অবৈধভাবে পুকুর ভরাটের কাজ জনসাধারণের গোচরে আসলে তারা সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগিত করলে কর্তৃপক্ষ একটি আদেশ দ্বারা পুকুরটি ভরাট কাজ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এর ২/৩ দিন পর এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা পুনরায় পুকুর ভরাট কার্যক্রম শুরু করলে এলাকাবাসী বাধা প্রদান করে। এসময় জনৈক মোঃ আব্দুল জলিল, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোছাঃ মাহমুদা পারভীন ববি, মোঃ নাসির প্রকাশ্যে জনসাধারণের সম্মুখে ঘোষণা করেন যে, জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে তারা ভরাট কার্যক্রম সম্পাদন করছেন।

এসময় তাদের কাছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে তারা বলেন, অনুমতিপত্র আপনারা দেখতে চাইলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের থেকে দেখে আসেন। এদের পিছনে স্থানীয় এক পৌর কাউন্সিলর ও শ্রমিক লীগ নেতার হাত রয়েছে। সোমবার থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা শাখার পক্ষ থেকে সাইন বোর্ড টানিয়ে ভরাট কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ওই ভূমিদস্যু চক্রটি আবারো চ্যালেঞ্জ করে পুকুর ভরাট করার জন্য দৌড় ঝাঁপ শুরু করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, আইনের বাইরে যেয়ে পুকুর বা জলাশয় ভরাট করার কোনি সূযোগ নেই। সোমবার কাজ বন্ধ করার জন্য ধোপা পুকুর পাড়ে বিশেষ সতর্কীকরণ বোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যারা পুকুর পাড় বাঁধানোর নামে বরাট করার চেষ্টা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরকে/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০২১)