স্টাফ রিপোর্টার, সুনামগঞ্জ : সপ্তম ধাপে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে জামায়াত শিবির নেতার আপন ভাতিজা মনোয়ন বোর্ডে আবেদন করায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, খোদ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও তোলপার শুরু হয়েছে।

এবার এমন অভিযোগ উঠেছে সপ্তম ধাপের সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার মনোয়ন প্রত্যাশী জাবির আহমেদ জাবেরের বিরুদ্ধে।

জাবির উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের কলাগাঁও গ্রামের পল্লী চিকিৎসক বশির আহমদের ছেলে ও বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জামায়াত শিবিরের সক্রিয় নেতা সংগঠক মাওলানা খাইরুল বাশারের আপন ভাতিজা।

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে তাকে নৌকা প্রতীকে মনোয়ন না দিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি,সাধারন সম্পাদক,আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মনোয়ন বোর্ড,জেলা,উপজেলা আওয়ামী লীগ বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করা হয়।

সোমবার রাতে অভিযোগকারী উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল খালেক গণমাধ্যমকে জানান,মাওলানা খায়রুল বাশার জামায়াত শিবিরের একজন সক্রিয় নেতা ,বিগত নির্বাচনে তিনি নৌকার মনোনীত প্রাথীকে পরাজিত করতে গিয়ে নিজেই প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন এরপর কৌশল পাল্টে ফের সপ্তম ধাপে উপজেলার সাত ইউনিয়নে নৌকার মনোয়ন প্রাপ্তির পর নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরাজিত করতে তারই আপন ভাতিজা জাবিরকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ডের নিকট।

প্রতিক্রিয়া জানতে গিয়ে সোমবার রাতে থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার (সাবেক) বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সহিদ তালুকদার বললেন, জামায়াত শিবির পরিবারের কাউকে আওয়ামী লীগ তথা নৌকা প্রতীকের মনোয়ন দিলে একাওরের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের দল হিসাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেমন সাধারন ভোটারদের কাছে সমালোচিত হবে তেমনি এমন কান্ডে নিশ্চিত গোটা উপজেলার সাত ইউনিয়নে ভোটের মাঠে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের উপর বিরূপ মনোভাব তৈরী হতে পারে।

সোমবার রাতে জানতে চাইলে জাবির আহমেদ জাবের গণমাধ্যমকে বলেন, তাহিরপুরের শ্রীপুর উওর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পেতে সোমবার (আজ)নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ডে আবেদন ফরম জমা দিয়েছি। ছাত্র জীবনে সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছিলাম,বর্তমানে আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে তার চাচা মাওলানা খায়রুল বাশারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাবের বলেন,আমার চাচা জামায়াতের কোন সদস্য পদে রয়েছেন কি না তা আমার জানা নেই, এমনকি কারো নিকট এ ধরণের কোন প্রমাণ নেই।

সোমবার রাতে অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি গণমাধ্যমকে তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কান্তি কর জানান,জামায়াত নেতার ভাতিজা জাবেরের চাচা মাওলানা খায়রুল বাশার এলাকায় জামায়াত শিবিরকে সংগঠিত করেন এবং জামায়াত শিবিরের একজন সক্রিয় নেতা, এমনকি জাবেদের পুরো পরিবার জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাই তার ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই দ্রুত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীর জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারন সম্পাদক সড়ক ও সেতু পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মনোয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অবগত করা হয়েছে।

(এইচএসএ/এএস/জানুয়ারি ০৪, ২০২২)