স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী সমীপে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা উচ্ছেদসহ ৮ দফা মৌলিক দাবিতে পেশকৃতব্য স্মারকলিপির স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের আগেই বিপুলসংখ্যক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বাক্ষরসম্বলিত  স্মারকলিপি আনুষ্ঠানিকভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর পেশ করা হবে।

অদ্য ১৩ জানুয়ারী একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সংগঠনের চেয়ারম্যান লেখক গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবীর আহাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য, ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাশেম আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জুলকারনাইন ডালিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সারওয়ার জাহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুকুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন চক্রবর্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেখারাণী গুণ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার। ঢাকার বাইরে থেকে সভার সিদ্ধান্তের সাথে ঐকমত্য প্রকাশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব আহমেদ শিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক বিশ্বাস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহারউল্লাহ মজুমদার।

স্মারকলিপির ওপর দেশের সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আস্থার প্রতিফলন ঘটায় এবং এর ওপর তাদের স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে বিপুল আগ্রহ পরিলিক্ষত হওয়ায় সভায় গভীর স্বস্তি প্রকাশ করা হয়। স্বাক্ষরকর্মের সর্বশেষ চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণের পক্ষে বাস্তব কারণ হলো, সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্মারকলিপির কপি পৌঁছনোর সমস্যা, অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা অশীতিপর বৃদ্ধ ও অসুস্থ, ফলে তাদের পক্ষে দূরবর্তী কোথাও গিয়ে স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করা কঠিন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইউনিয়ন ও পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে অনেকেই ব্যস্ত, দেশব্যাপী নতুন করে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু ইত্যাদিহেতু স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত অব্যাহত গতিতে চলবে। স্বাক্ষর সংগ্রহ সমাপ্ত হলে স্বাক্ষরিত স্মারকলিপির মূল কপি ডাক অথবা কুরিয়ার সার্ভিস যোগে আমাদের সংগঠনের ঠিকানায় পাঠাতে হবে।

বাংলাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এযাবতকালের মধ্যে এ ধরনের একটা পদক্ষেপ ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে বিধায়, এ পদক্ষেপ ও প্রক্রিয়ার সাথে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারা সম্পৃক্ত থেকে ইতিহাসের সাক্ষী হতে চান বলে সভায় অভিমত প্রকাশ করা হয়। এ জন্য প্রচুর সময় নিয়ে আমরা সবাইকে সঙ্গী করে চলতে চাই।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেশকিছু বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্মারকলিপির ওপর স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। সভায় তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। পূর্বেই বলা হয়েছে যে, শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে তাদের পরিবারের যেকোনো সদস্য স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করতে পারবেন।

পরিশেষে সভায় ইতিহাস সৃষ্টিকারী এ যুগান্তকারী পদক্ষেপকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে দেশের সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, বিশালসংখ্যক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বাক্ষরে যদি স্মারকলিপিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে পেশ করতে পারা যায়, তাহলে নিশ্চিত বলা যায় যে, তিনি অবশ্যই স্মারকলিপির দাবিসমূহ মূল্যায়ন করবেন। এ কারণেই সবাইকে স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে।

যারা এখনো স্মারকলিপির কপি পাননি, তারা ইমেইল, হোয়াট্সআপ ও ইমো নং পাঠিয়ে স্মারকলিপির কপি সংগ্রহ করতে পারেন। ঢাকায় অবস্থানরত বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ২২ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ২য়তলা, মতিঝিল, ঢাকা, এ ঠিকানায় এসে স্মারকলিপির কপি সংগ্রহ অথবা স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করে যেতে পারেন।

(এ/এসপি/জানুয়ারি ১৩, ২০২২)