আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একটি দেশের আমদানি ও রপ্তানি বিশ্লেষণ করলেই বের হয়ে আসে বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত নাকি ঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ আমদানির তুলনায় রপ্তানি বেশি হলে বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত থাকে। অন্যদিকে রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হলে ঘাটতি দেখা যায়। বাণিজ্যের এমন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বছর চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রেকর্ড ছাড়িয়েছে। যা বছরের শেষ মাস পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

এ সময় দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্ত নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। করোনা মহামারি চলাকালে যা দেশটির অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশটির শুল্ক প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের রপ্তানি আয় ছিল ৩৪ হাজার ৫০ কোটি ডলার। যা নিয়ে পুরো বছরে দেশটির মোট রপ্তানি দাঁড়ায় তিন দশমিক ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলারে (এক লাখ কোটিতে এক ট্রিলিয়ন)।

অন্যদিকে ডিসেম্বরে আমদানি করা হয় ২৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের পণ্য। বছরজুড়ে যার পরিমাণ দাঁড়ায় দুই দশমিক ৬৯ ট্রিলিয়ন ডলারে। ফলে ডিসেম্বর মাসের হিসাবে দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল নয় হাজার ৪৫০ কোটি ডলার। এর মাধ্যমে ২০২১ সালে চীনের মোট বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়ায় ৬৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে।

সারা বছর ধরেই চীনের কারখানাগুলোতে তৈরি ইলেকট্রনিক্স পণ্য থেকে শুরু করে আসবাবপত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তবে ধারণা করা হচ্ছে নতুন বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে দেশটির বাণিজ্য কমবে। কারণ ঘরে বসে কাজ করার প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য সরঞ্জামের চাহিদা এ সময় কম থাকবে। তাছাড়া বিশ্ব এখন করোনার সঙ্গে বাঁচার নীতি অবলম্বন করছে।

গ্রেটার চায়নার প্রধান অর্থনীতিবিদ ডিং শুয়াং বলেন, এই বছর রপ্তানি বাড়ার হার দ্রুত কমবে কারণ বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ধীর হতে পারে। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চীনের অভ্যন্তরীণ বিধিনিষেধ ও লকডাউনের কারণেও বাণিজ্য কমতে পারে। তবে বাহ্যিক চাহিদা কীভাবে বিকশিত হতে পারে তার ওপরেও অনেক কিছু নির্ভর করবে।

এদিকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন বিশ্বব্যাপী দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চীনের সরবরাহ ব্যবস্থায়। কারণ দেশটিতে নতুনভাবে কঠোর বিধিনিষেধে আরোপ করছে দেশটির সরকার।

শুল্ক প্রশাসনের মুখপাত্র লি কুইওয়েন বেইজিংয়ে বিবৃতিতে বলেন, এই বছর বৈদেশিক বাণিজ্য আরও অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীল ও ভারসাম্যহীনতা দেখা যেতে পারে।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২২)