চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : মহরম আলী (৭০) এসেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের সোনারগাঁও গ্রাম থেকে। শীতের কম্বল পেয়ে স্ফীত হাসি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘এই ক’দিনের শীতে আমাকে কাহিল করে দিছে, দেশের পোলা তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এই কম্বল পেয়ে উপকারের ভাষা বলে আমি বুঝাতে পারব না।’

খন্ডলিয়াপাড়া গ্রামের জয়নব বেগম (৫৫) বলেন, ‘গ্রামের গরিবদের শীতের কষ্ট দেখার লোক নেই। যিনি আমাদের মতো গরিব মানুষের খোঁজ নিয়ে শীতের কাপড় (কম্বল) দিচ্ছে তাঁকে আল্লাহ বাঁচায় রাখুক।’

ধামাইরহাট কাজীপাড়া গ্রাম থেকে আসা জাহানারা বেগম (৬০) কম্বল পেয়ে বলেন, ‘ডেকে ডেকে কম্বল কয়জনে দেয় ? যেটা পেয়েছি তাতেই খুব খুশি হলাম। শীত নিবারণে কিছুটা হলেও উপকার হবে।’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী’র উপহার ‘শীতের কম্বল’ পেয়ে এসব উচ্ছ্বাস ও হাসিমাখা কথাগুলো বলেছেন পাহাড়-সমতল বেষ্ঠিত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শীতার্ত ও দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলো।

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের প্রায় ৫’শ শীতার্তের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।

এমাসের শুরু থেকে নিজের নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভা এবং পাশের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরন্ধীপ ইউনিয়নের শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নেন তথ্যমন্ত্রী। এপর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার শীতার্তের কাছে পৌঁছানো হয়েছে কম্বল। রাঙ্গুনিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে কিংবা পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে বসবাসকারী শীতার্ত দরিদ্র পরিবারগুলোর দড়জায় কম্বল পৌঁছানো অব্যাহত থাকবে বলে জানান এনএনকে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মাষ্টার আবদুর রউফ।

রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নের হিলাগাজী পাড়ার সখিনা বেগম (৫৫), সাজেদা বেগম (৬০), পৌরসভার ইছাখালি গ্রামের হেমন্ত জলদাস (৭২), পূর্বসরফভাটা গ্রামের আলী হোসেন (৫৫), নুর নাহার (৫৮), চন্দ্রঘোনা বনগ্রামের ছাবেদা খাতুন (৪৫) ও সাহিদা খাতুন (৫০) কম্বল পেয়ে খুবই খুশি তারা। কম্বল পেয়ে এসব শীতার্ত মানুষের চোখে-মুখে ছিল খুশি আর আনন্দের উচ্ছ্বাস।

দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাজানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণ রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ ছৈয়দ তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জসিম উদ্দিন তালুকদার, এনএনকে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা এনামুল হক, শৈবাল চক্রবর্তী প্রমুখ।

তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এমরুল করিম রাশেদ জানান, পার্বত্য পাহাড়ের পাদদেশে কর্ণফুলি নদী বিধৌত রাঙ্গুনিয়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পাহাড়-সমতল বেষ্ঠিত। ফলে এখানে শীতের তীব্রতা রয়েছে। গত কয়েকদিনের শীতের তীব্রতা টের পাচ্ছে রাঙ্গুনিয়ার শীতার্ত মানুষ। সবচেয়ে কষ্টে আছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র শ্রেণির জনগোষ্ঠী। শীতার্ত এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মহোদয়। কম্বল পেয়ে খুশি দরিদ্র জনগোষ্ঠী। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

(জেজে/এএস/জানুয়ারি ১৬, ২০২২)