ফুলবাড়ী প্রতিনিধি : দুই সপ্তাহ ধরে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার মাঠে মাঠে আগাম জাতের আলু উত্তোলন করছেন কৃষকরা। অনুকূল আবহাওয়া আর সময়মতো সার ও বীজ পাওয়ার কারণে এবার ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে আলুর আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে। তাই আলুর ভালো দাম না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

আলুচাষিরা জানান, এখন যারা আলু তুলে বিক্রি করছেন, তাদের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। চাষাবাদ, সার, বীজ, সেচ, শ্রমসহ সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ তো দূরের কথা, আসলও উঠছে না। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর বাজার প্রতি মণ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। এভাবে কমতে থাকলে আগামী সপ্তাহে যারা আলু তুলবেন, তাদের আরও বেশি লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

সরেজমিন দেখা যায়, সদর উপজেলার পলিপাড়া, গোয়ালপাড়া, শিবনগর, পলিশিবনগর, বুজরুক শিবনগর, পাঠকপাড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন মাঠসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠে চাষিরা আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সোমবার স্থানীয় ফুলবাড়ী পৌর বাজারে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা জানান, বাজারে প্রতি মণ ক্যারেজ আলু ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গ্যানোলা আলু ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা মণ।

উপজেলার পাঠকপাড়া গ্রামের আলুচাষি নিপিন চন্দ্র ও বাবলু মিয়া বলেন, রোপণের ৬০ দিন বয়সে আলু তুলেছেন। জমিতে ফলন হয়েছে ৭০ মণ। ফসলের উৎপাদন খরচ হয়েছে ২৩ হাজার টাকা। ৩০৫ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করে হয়েছে সাড়ে ২১ হাজার টাকা। তাতে লোকসান হয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। মাঠে আরও আলু আছে। দশ-পনেরো দিন পর সেগুলো তুলতে হবে। কিন্তু বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় ব্যাপক লোকসানের ভয়ে আছেন।

পৌর বাজারের পাইকার নবিউল ইসলাম ও দীপক কুমার বলেন, কাঁচামালের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। এটা নির্ভর করে আমদানির ওপর।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার এক হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অধিক জমিতে আলুর চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, হিমাগারগুলোতে এখন পর্যন্ত গত বছরের কিছু মজুদ থাকায় আগাম জাতের আলুর দাম কমতির দিকে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে হিমাগারে সংরক্ষিত আলু শেষ হলেই নতুন আলুর চাহিদা ও দাম দুটোই বাড়বে। এতে চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

(এম/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০২২)