উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ জন বিশিষ্ট শিক্ষক এক যুক্ত বিবৃতিতে জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থাকে (বি এন আর) জাতীয় একাডেমীতে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে অবিলম্বে পূর্ব বাংলার সাংস্কৃতিক স্বার্থ-বিরোধী এই সংস্থা বিলোপের দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান এই সংস্থা (বি এন আর ) প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এর কারযকলাপ গণমনে সন্দেহের সৃষ্টি করে। এই সংস্থা আজো পূর্ব বাংলার সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারকে ধ্বংস করার প্রয়াসে নিযুক্ত প্রতিক্রিয়ার ঘাঁটি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।এই সংস্থা বিলোপের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন: ড.মুহম্মদ এনামুল হক (বাংলা), ড. মোফাজ্জল আহমদ চৌধুরী (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), ড. ওয়াহিদুল হক (অর্থনীতি), ড. আহমদ শরীফ (বাংলা), অধ্যাপক রেহমান সোবহান (অর্থনীতি), ড. রমজান আলী সরদার (গণিত), অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী (বাংলা), অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ মিয়া (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), ড. হানিফ ফউক (উর্দু) ড. আবুল খায়ের (ইতিহাস), ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (ইংরেজী), ড. বিলায়েত হোসেন (পদার্থবিদ্যা), ড. জিল্লুর রহমান খান( রাষ্ট্রবিজ্ঞান), ড. অজয় রায়(পদার্থবিদ্যা), অধ্যাপক জয়নুল আবেদীন(রাষ্ট্রবিজ্ঞান), অধ্যাপক সাদ উদ্দিন (সমাজবিজ্ঞান), অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন(ইতিহাস), অধ্যাপক আহসানুল হক (ইংরেজী) ও অধ্যাপক লুৎফুল হক (ভূগোল)।

পূর্ব পাকিস্তান মহিলা পরিষদের আহ্বানে দ্রব্যমুল্য হ্রাস ও মহিলাদের চলাফেরার নিশ্চয়তা বিধানের দাবীতে রাজধানীতে সমাবেশ, মিছিল ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারী মহিলারা মিছিল করে প্রাদেশিক গর্ভনর ভবনের সামনে যান এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল গর্ভনরের সাথে দেখা করেন, ম্সারকলিপি পেশের চেষ্টা করেন কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্য তাঁরা ব্যর্থ হন। পূর্ব পাকিস্তান মহিলা পরিষদের সভানেত্রী সুফিয়া কামাল এই সমাবেশে সভানেত্রীত্ব করেন। সভায় বক্তৃতা করেন মিসেস হামিদা রহমান। তিনি দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং মহিলাদের চলাফেরায় নিরাপত্তাসহ বন্যা সমস্যার জরুরী সমাধান দাবি করেন। সভায় মতিয়া চৌধুরীও বক্তৃতা করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও ছাত্রদের গ্রেফতারের সময় প্রশাসন কর্তৃপক্ষ একেবারে ‘ন্যাকা’ সেজে থাকেন। তিনি দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি রোধে কাযকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। সভানেত্রীর ভাষণে বেগম সুফিয়া কামাল মহিলাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় মহিলাদের সংগঠনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান।

রাওয়ালপিন্ডির সাপ্তাহিক ‘ইন্টার উইং’ পত্রিকায় একটি নিবন্ধ প্রকাশের অভিযোগে বিচারাধীন শামসুদ্দোহা ও সৈয়দ নজিউল্লাহ আজ তাঁদের কৌশলী প্রত্যাহার করেছেন। তাঁরা আদালতকে জানান,তাঁরা আদালতে সরকারি সাক্ষীদের কোনো জেরা অথবা আদালতে কোনো বিবাদী সাক্ষী দাঁড় করাবেন না । তাঁরা বলেন, আমরা এটা আদালতের কৃপার উপর ছেড়ে দিয়েছি। আদালত শামসুদ্দোহার জামিনের আবেদন নাকচ করে দেয়। অন্যদিকে কম্বাইন্ড মিলিটারী হাসপাতাল থেকে সৈয়দ নজিউল্লাহর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত রিপোর্ট না আসা পযন্ত তাঁর জামিনের আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।

সিন্ধু জাতীয় ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আহমদ খান জামিলী নয়া শাসনতন্ত্রে পাকিস্তানকে একটি বহুজাতিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার জন্য জাতীয় পরিষদের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। এক বিবৃতিতে তিনি নয়া শাসনতন্ত্রে সকল প্রদেশকে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন প্রদানের দাবি জানান। তিনি বলেন, সিন্ধি, বেলুচ,পশতু ও পাঞ্জাবিকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা এবং সংশ্লিষ্ট প্রদেশের সরকারি ভাষা ঘোষণা করা উচিত। তিনি দ্বিকক্ষ আইন পরিষদ এবং জমির মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা একশত একর ধায করার সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, সিন্ধুর সরকারি ভাষা শুধুমাত্র সিন্ধি হওয়া উচিত এবং সিন্ধি ভাষার সিন্ধু পরিষদের কাযবিবরণী পরিচালনার দাবি জানান।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ১৯, ২০২২)