ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা সভাপতি মিহির ঘোষসহ নেতাকর্মীদের ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের ডিবি রোডে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (গানাসাস) সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পার্টির গাইবান্ধার নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মামলাকে ‘হয়রানিমূলক’ উল্লেখ করে অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার ও হামলা-নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান সিপিবি জেলা নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, সাবেক জেলা সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির জেলা সভাপতি শুভাষ শাহ রায় প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে গাইবান্ধা সদরের গিদারীতে সিপিবির প্রার্থীকে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ‘পরাজিত’ করে সরকারদলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, চেয়্যারম্যান পদপ্রার্থী কৃষক নেতা সাদেকুল ইসলামসহ আটজন নেতাকর্মীর নামে হয়রানিম‚লক মিথ্যা মামলা দিয়ে জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছেন। অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার ও হামলা-নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান তারা।

সমাবেশ শুরুর আগে শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশস্থলে এসে শেষ হয়। এ সময় সিপিবি নেতাকর্মীরা হাতে দাবি-দাওয়া সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও লাল পতাকা বহন করে এবং মামলা প্রত্যাহার ও নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।

একই সময়ে গোবিন্দগঞ্জেও নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। উপজেলা সিপিবি’র সভাপতি অশোক আগরওয়ালার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা কমিটির সদস্য তাজুল ইসলাম, উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মোবারক, ওয়াহেদুজ্জামান মিলন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কাউন্সিল বাজারে দক্ষিণ গিদারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগণনাকালে সহিংসতার ঘটনায় একিট রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন গিদারী ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ ইদু। একই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর একটি মামলা করেন গিদারী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা আতাউর রহমান। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওই মামলায় উল্লিখিত ছয়জনসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। পরে ওই মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করতে গেলে আদালত তাদের ছয় সপ্তাহ সময় দিয়ে রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামি সিপিবি নেতা মিহির ঘোষসহ ছয়জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ২০, ২০২২)