বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে একাধিক শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যৌন হয়রানির শিকার এক শিশু ছাত্রীর অভিভাবকের মামলা দায়েরের পর জিউধরা ফাঁড়ি পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারকে গ্রেফতার করে।

এলাকাবাসী জানায়, জিউধরা ইউনিয়নের বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার স্কুলের পঞ্চম শ্রেনীর একাধিক ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন হয়রানী করে আসছিলেন। গত ৫ জানুয়ারি পশ্চিম জিউধরা গ্রামের জনৈক ব্যাক্তির পঞ্চম শ্রেণীতে পড়–য়া নাতনীকে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল যৌন হয়রানী করলে ওই ছাত্রীটি বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি তার নানা-নানীর কাছে বলে দেয়। সে আর ওই বিদ্যালয়ে যাবেনা এবং জোর করে পাঠালে সে আত্মহত্যা করবে বলেও নানা-নানীকে হুমকি দেয়। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষকের হাতে একাধিক ছাত্রী যৌন হয়রানীর বিষয়টি বেরিয়ে আসতে থাকে।

প্রধান শিক্ষকের যৌন হয়রানীর শিকার একাধিক ছাত্রী জানান, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার বিভিন্ন সময় তার কক্ষে ডেকে নিয়ে তাদেরকে আদর করে চুমু দেন, কোলে বসিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন। পরে গত ১১ জানুয়ারী যৌন হয়রানীর অভিযোগ এনে পঞ্চম শ্রেনীর ওই ছাত্রীর নানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীর অভিভাবকে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর ক্ষোভ বাড়তে থাকে প্রধান শিক্ষকের যৌন হয়রানীর শিকার অন্যান্য ছাত্রীর অভিভাবকদের মধ্যে। তারা ওই স্কুলে মেয়েদের পাঠানো বন্ধ করে দেয়।

মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) তুহিন মন্ডল জানান, বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যৌন হয়রানীর শিকার পঞ্চম শ্রেনীর মেয়ে শিক্ষার্থীর অভিভাবক বটতলা গ্রামের বাবুল খোন্দকার বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে জিউধরা ফাঁড়ি পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকালে অভিযান চালিয়ে প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারকে গ্রেফতার করা হয়।

(এসএকে/এসপি/জানুয়ারি ২০, ২০২২)