কলাপাড়া প্রতিনিধি : পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের চাপের মুখে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বাদুরতলী কলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আলোচিত প্রধান শিক্ষক গাজী জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কলাপাড়া প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরনের কারনে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে না আসার নির্দেশ দিয়েছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

কলাপাড়া পৌর শহররের বাদুরতলী কলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে গত ১৭ এপ্রিল বিকালে কোচিং ক্লাস শেষে তাকে একা রুমে ডেকে শ্লীলতাহানি করে প্রধান শিক্ষক গাজী জহিরুল ইসলাম।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রী তার বাবা-মাকে এ ঘটনা জানালে মানসম্মানের ভয়ে তাকে স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনা জানাজানি হলে ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর অন্য ছাত্রীরাও তাদের সাথে প্রধান শিক্ষক অশোভন আচরণ করেছে বলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে নালিশ করলে প্রধান শিক্ষকের যৌনহয়রানীর তথ্য বেরিয়ে আসে।

এ ঘটনায় গত বুধবার সকালে একাধিক অভিভাবক বিচার দাবি ও প্রধান শিক্ষকের অপসারন দাবি করে বিদ্যালয়ে ভীড় করে। প্রধান শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানীর শিকার ছাত্রীরা জানান, তাদের ক্লাস রুমে, কোচিং ক্লাসে ও শিক্ষকদের রুমে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন সময় শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত বুলানোসহ অশালীন আচরণ ও অশ্লীল ছবি দেখাতো।

এ ঘটনা কাউকে জানালে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার ভয় দেখানোর কারনে তারা এ ঘটনা এতোদিন প্রকাশ করেনি। অভিভাবকদের দাবি ওই লম্পট শিক্ষক স্কুলে থাকলে তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গাজী জহিরুল ইসলাম জানান, এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ছাত্রীদের সাথে তিনি কোনো অশোভন আচরণ করেননি।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সালাম সরদার জানান, অভিভাবক ও ছাত্রীদের কাছ থেকে ঘটনা শুনে বিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষায় তাকে স্কুলে আসতে নিষেধ করেছি। এ ঘটনার এখন তদন্ত চলছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, তিনি ছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

একাধিক অভিভাবক জানান, ওই শিক্ষককে এই স্কুল থেকে অপসারন করা না হলে পরীক্ষার পর তারা স্কুল ঘেরাও, মানববন্ধন ও তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করবেন।


(এমকেআর/এটি/ এপ্রিল ২৫, ২০১৪)