কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবা সহ ব্যবসায়ী আটকের প্রতিবাদে টেকনাফ স্থল বন্দরে অনিদির্ষ্টকালের ধর্মঘট ৪র্থ দিনের মতো চলছে। টেকনাফ সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ মো. আয়াছ ও সদস্য জিয়াবুল হোসেনকে আটকের প্রতিবাদে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, আমদানী-রপ্তানিকারক সমিতি ও ট্র্রাক মালিক-শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এই ধর্মঘট আহবান করে।

ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে টেকনাফ স্থল বন্দরে সকল প্রকার পণ্য উঠা-নামা ও আমদানী-রপ্তানী বন্ধ রয়েছে।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ব্যবসায়ী সংগঠনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোনো ধরনের সুরহা হয়নি। ফলে ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে শুক্রবারও।
এদিকে বিষয়টিকে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের রক্ষার মিশন বলে মন্তব্য করেছেন অনেক সাধারণ ব্যবসায়ী।

সোমবার রাতে টেকনাফ বিজিবি’র ৪২ ব্যাটালিয়নের এক সদস্য টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জিয়াবুল ও মোহাম্মদ আয়াজ নামে দুই ভাইকে ইয়াবাসহ আটক করে মামলা দায়ের করে।

এ ঘটনায় ব্যবসায়ী, ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে ওইদিন রাতে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত বন্দরের সব ধরনেরর কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। এরপর থেকে টেকনাফ বন্দরে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিদার হোসেন, আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি শফিকউল্লাহ ও ট্রাক মালিক-শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাতে সংগঠনের কার্যালয়ে বৈঠকেও ধর্মঘট অটল রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাদেরকে মাদক মামলায় অভিযুক্ত করে আদালতে পাঠানো হয়েছে তাদেরকে স্থলবন্দর ও বন্দরের মালামালের সঙ্গে আটক করা হয়নি। এরপরও কিছু নামধারী ব্যবসায়ী তাদের স্বার্থ হাসিলেও উদ্দেশে যখন তখন ধর্মঘট দিয়ে বন্দর অচল করে রাখে। এতে তাদের কিছু আসে যায় না, ক্ষতি হয় প্রকৃত ব্যবসায়ী ও সরকারে।

টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ব্যবস্থাপক অপারেশন আবু নুর খালিদ জানিয়েছেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়ে সব ধরনের পণ্য খালাস বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেও কোনো ধরনের সুরহা হয়নি। আর এর কারণে প্রতিদিন গড়ে ৪১ লাখ রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

টেকনাফ বিজিবি ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানিয়েছেন, ইয়াবা বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে অভিযুক্ত ২ ব্যবসায়ীকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন এটা আইন-আদালতের ব্যাপার।

টেকনাফ থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া জানিয়েছেন, আটক ওই ২ ব্যবসায়ীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

টেকনাফে ইয়াবা বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সোমবার ইয়াবাসহ ৫ জনকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ( বিজিবি-৪২) সদস্যরা। এদের মধ্যে আয়াছ ও জিয়াবুল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধক্ষ ও সদস্য। তাদেরকে আটকের প্রতিবাদে ৩টি সংগঠন মঙ্গলবার থেকে এ ধর্মঘট পালন করছে।


(টিটি/এটি/এপ্রিল ২৫, ২০১৪)