মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : চলতি বন্যার পানি নেমে যাবার সাথে সাথেই নেত্রকোণার মদন উপজেলার আমন চাষীরা তলিয়ে যাওয়া নষ্ট জমিসহ অন্যান্য জমি চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে এলাকায় ধানের চারা সংকট দেখা দেয়। ফলে প্রতি ১০ শতাংশ জমির চারা ১ হাজার টাকা দরে কিনে বাধ্য হয়ে বাপ-দাদার পেশা বোরো ধান আবাদের সহায়ক আমন চাষ করছে।

তবে আমনের চারা এবার আগাম রোপন করায় অধিকাংশ চারায় গেজ জন্মেছে। এতে আশানুরুপ ফলন পাবে কিনা সংশয়ে ভুগছেন চাষীরা। গত ৩দিন ধরে আবারো বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় পানি বেড়ে অনেক নব্য রোপনকৃত জমি তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই উচ্চ ফলনশীল আবাদের সময় পার হয়ে গেছে। চলতি অর্থবছরে মদন উপজেলায় ৬ হাজার ১শ হেক্টর উচ্চ ফলনশীল ও ৪ হাজার হেক্টর স্থানীয় জাতের আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

পানি বিলম্বে নামায় এবং চারা সংকটের কারণে এই এলাকায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ফতেপুর গ্রামের বর্গাচাষী কলেজ মিয়া জানান, চলতি বছর ২০ কাঠা জমি ২০ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে শ্রাবণ মাসে পানি সরে যাওয়ায় ১২ কাঠা রোপন করি। হঠাৎ হাওর ও নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জমি তলিয়ে যায়। এতে তিনি আমন ধানের সংকটে পড়েন এবং শুক্রবার হাটশিরা বাজার থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়ে ১২ কাঠা জমির গেজ চারা কিনেছেন। লাভ হবেনা ভেবেও পূর্ব পুরুষের পেশা এবং বোরো আবাদের সহায়ক আমন চাষ করেছেন। বালালী গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক জহিরুল ইসলাম জানান, ঋণ করে জমির চারা সহ ১০ কাঠা জমি রোপন করে ছিলাম। পানি বেড়ে চারা তলিয়ে যায়। এখন চারা সংকটসহ অর্থনৈতিক দুরাবস্থায় ভুগছি।

আমার মতো আরো অনেক কৃষক এই দুরাবস্থায় পড়েছে। ফলে এ বছর বহু জমি অনাবাদী থাকবে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা গোলাম রসুল জমি অনাবাদী থাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কৃষকরা দুইবার চারা রোপন করার পর তলিয়ে যাওয়ায় এলাকায় চারার সংকট দেখা দিয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদের সময় নেই তবে দেশীয় জাতের চারা আবাদ হবে।

(এসএমএ/এএস/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৪)