স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে গণমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন এক অনন্য মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। এ আইন প্রণয়নের মধ্যদিয়ে দেশ গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) নিজের বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে জনগণের বহুল প্রত্যাশিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া সংবিধানের অভিপ্রায় অনুযায়ী দেশের পঞ্চাশ বছর পর ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’ পাস হওয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংসদ নেতাসহ জাতীয় সংসদের সব সদস্যদের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান ওবায়দুল কাদের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে গণতন্ত্র ও জনমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণে যা কিছু হয়েছে তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মতো নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে সব রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধানের আলোকে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে এ আইন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

জনগণের ভোটে নির্বাচিত সব জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা প্রণীত এ আইনকে দেশের একটি চিহ্নিত মহল অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশে ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে যে মন্তব্য করেছেন সে প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব কমিশনার নিয়োগের এ আইন না মানার বিষয়ে তিনি দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তবে, যে দল বা ব্যক্তি দেশের জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করে, তাদের কাছ থেকে এ ধরনের উদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যই প্রত্যাশিত ছিল বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি মহাসচিব দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থি গণধিকৃত গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য রেখেছে— তা দেশের গণতন্ত্র, জাতীয় সংসদের সব সদস্য ও দেশের সংবিধান এবং আইনের শাসনের প্রতি নির্মম উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ আইনকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিমূলক মনগড়া বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের আইন ও সংবিধানের প্রতি বিএনপির কোনো বিশ্বাস নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি মির্জা ফখরুল নিজ মুখেই স্বীকার করেছেন। শুধু তাই নয়, বিএনপি মহাসচিব দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিতে মার্কিন প্রশাসনের রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়েছেন। যা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।’

বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জাতির কাছে স্পষ্ট করতে হবে, তারা কাদের দেওয়া টাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন? বাংলাদেশ থেকে এ অর্থ কোন চ্যানেলে বিদেশে পাচার করা হয়েছে? তার হিসাব কি বিএনপি নির্বাচন কমিশনের কাছে দিয়েছেন? ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবের কাছে এত সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তা না পারলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো নৈতিক ও আইনগত অধিকার থাকবে না।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০২২)