আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) এ সতর্কবার্তা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

এদিন ক্রেমলিনের পক্ষ থেকেও উত্তেজনা কমার বিষয়ে খুব একটা আশার কথা শোনা যায়নি। রাশিয়া বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রধান দাবি প্রত্যাখ্যান করায় আশাবাদী হওয়ার সুযোগ কমে এসেছে। এর মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানালেন, আগামী মাসেই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে।

হোয়াইট হাউজ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র এমিলি হর্ন জানান, বাইডেন বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর বড় আশঙ্কা রয়েছে। আমরা কয়েক মাস ধরে এ নিয়ে সতর্ক করে আসছি।

বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এক টুইটে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ হলো। সাম্প্রতিক উত্তেজনা প্রশমনে আলোচনা হয়েছে এবং আমরা ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছি। ইউক্রেনে আর্থিক সহায়তার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। চলমান সামরিক সহায়তার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ধন্যবাদ জানাই।

এদিকে, রাশিয়ার আচরণকে ‘আশঙ্কাজাগানিয়া’ উল্লেখ করে ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষেদের জরুরি বৈঠক ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী সোমবার (৩১ জানুয়ারি) এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।

জাতিসংঘে ওয়াশিংটনের প্রতিনিধি লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করেছে ও দেশটিকে লক্ষ্য করে নানা অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও জাতিসংঘ সনদের জন্য সুস্পষ্ট হুমকি।

তিনি বলেন, আমরা উত্তেজনা কমাতে নিরলস কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকেও ইউক্রেন, রাশিয়া ও ইউরোপের জন্য কী কী ঝুঁকি রয়েছে এবং রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে আন্তর্জাতিক নীতি কেমন হবে তা অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।

নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের একটি হওয়ায় উত্থাপিত যেকোনো প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার অধিকার রয়েছে রাশিয়ার। এরপরও লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড মনে করছেন, সবার সামনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ড তুলে ধরা ও ইউক্রেনের প্রতি আগ্রাসী আচরণের জন্য ক্রেমলিনকে একঘরে করতে এটি একটি বড় সুযোগ।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় না রাশিয়া অন্য দেশ আক্রমণ করলে নিরাপত্তা পরিষদের কোনো সদস্য তা মেনে নেবে ও চুপচাপ বসে থাকবে। রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতা থাকলেও আমরা যদি নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন করি ও তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জোট দেখাতে পারি, তবে তারা (রাশিয়া) বিচ্ছিন্ন অনুভব করবে। সূত্র: আল জাজিরা, এএফপি।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০২২)