রিপন মারমা, রাঙামাটি : রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলাধীন ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বটতলী এলাকায় এবার লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ওয়ার্ডের অধিকাংশ কৃষকের জমিতে লেবুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন সুমেল তঞ্চঙ্গ্যাসহ প্রান্তিক চাষিরা। চাষকৃত ফল ও সবজির মধ্যে রয়েছে পেঁপে লেবু, টমেটো, লাউ, বেগুন, শসা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, লালশাক, শিম, কাঁচামরিচ ইত্যাদি।

এবছর কাপ্তাইয়ে লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে ফলনের পাশাপাশি বাজারে লেবুর দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে লেবুর দাম ও বাজারজাত নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকলেও সেই চিন্তা এখন কেটে গেছে চাষিদের। লেবু বিক্রি করে তাই বেশ খুশি কৃষকরা।

চাষকৃত বিভিন্ন সবজি স্হানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। ওই গ্রামের কৃষক সুমেল তঞ্চঙ্গ্যা লেবু ও সবজি চাষে সাফল্য চমকে দেয়। শুধু সুমেল তঞ্চঙ্গ্যা নয় ওয়াগ্গা ইউনিয়নে এরকম অনেক সফল সবজি চাষি রয়েছেন। যাদের সাফল্য অন্যদের উজ্জীবিত করছে। সফল কৃষক ও উদ্যোক্তা সুমেল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, তিনি নামমাত্র পড়ালেখা করেছেন। অভাবের তাড়নায় বেশি পড়ালেখা করা সম্ভব হয়নি। এরপর জীবনের তাগিদে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন কৃষিকাজে। প্রায় এক যুগ ধরে কৃষিকাজ নিয়েই আবিদ আলীর জীবন সংগ্রাম। তিনি কৃষি কাজের এক পর্যায়ে শুরু করেন লেবু, পেঁপে ও শাকসবজি চাষ। আর এ চাষের বদৌলতে বদলে গেছে তার ভাগ্য। তার পরিবারের আর্থিক অনটন অনেকটা কেটে গেছে। প্রতিবারের মতো এ বছরও তিনি দেড় জমিতে লেবু, পেঁপে, আর দেড় একর জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিমসহ হরেক রকমের সবজি চাষ করেছেন । তার খেটে গাছে প্রচুর পেঁপে ও লেবু এসেছে। একই ভাবে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের সুজয় তঞ্চঙ্গ্যা, পাভেল তঞ্চঙ্গ্যা সুমেল তঞ্চঙ্গ্যাকে অনুকরণ করে তারা প্রত্যেকেই সবজি চাষে লাভবান হয়ে উঠছেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কাপ্তাই উপজেলার ৫নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বটতলীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর ব্যাপকভাবে সবজি চাষ করা হয়েছে।এক সময় এসব এলাকা মিষ্টি আলু চাষের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল।কিন্তু তাতে মন্দা দেখা যায় এখন তারা লেবু, পেঁপে, টমেটো, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।কারন চাষাবাদ করে তাদের ভালো মুনাফা অর্জন হচ্ছে। এখানকার কৃষকরা বলছেন সরকারের আর্থিক সহযোগিতা পেলে অত্র ইউনিয়ন ও থেকে কৃষি বিপ্লব ঘটানো সম্ভব হবে।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুল আলম চৌধুরী জানান,এই বছরে কাপ্তাই প্রায় ১০০হেক্টর জমিতে লেবুর চাষ হয়েছে। সারা বছরই লেবুর ফলন পাওয়া যায় বলে এখানে লেবুর চাষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রতিনিয়তই এখানে লেবু চাষিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরোও জানান, কম পরিশ্রম লাগায় ও বেশি ফলন হওয়ার কারণে লেবু চাষে আগ্রহী হয়েছেন চাষিরা। তাছাড়াও লেবুর চাষে খুব একটা কীটনাশকের ব্যবহারে প্রয়োজন হয় না। আমরা লেবু চাষের ব্যাপারে সব ধরণের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।যেহেতু করোনা মহামারী চলছে এখন প্রচুর ভিটামিন সি খাওয়ানো প্রয়োজন তো সেক্ষেত্রে লেবুর খাওয়া চাহিদা বেড়ে গেছে ফলে পূর্বেকার যেকোন সময় তুলনায় এই বছর কৃষকদের উৎপাদিত লেবুর বিক্রির বেড়ে গেছে।

(আরএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২২)