পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : পেকুয়ায় সাগর পথে মালেশিয়াগামী ২১ যাত্রীকে আবারো আটক করছে পুলিশ। গত ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের লঞ্চঘাট এলাকা থেকে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবৈধভাবে মালেশিয়াগামী  ২১জন যাত্রীকে আটক করে।   

পুলিশ জানায়, সাগর পথে আদম পাচারকারী চক্র উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কুতুবদিয়া চ্যানেলের নৌ মোহনার মগনামা লঞ্চঘাট এলাকায় ২১ মালেশিয়াগামী যাত্রীকে ইঞ্জিন চালিত বোটে করে এনে নামিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পেকুয়া থানার এ.এস.আই হাফেজ আহম্মদ খান একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে মালেশিয়াগামী ২১ যাত্রীকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন। দালালের খপ্পরে পড়ে টাঙ্গাইলের ২ জন, নরসিংদী ৯ জন, গাজীপুরের ১ জন, বি.বাড়িয়ার ২ জন, সিরাজগঞ্জ জেলার ৭ জনকে অবৈধ পথে মালেশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ট্রলার যোগে সকাল ৭ টায় প্রচন্ড বৃষ্টিতে পেকুয়া উপজেলার মগনামা লঞ্চঘাটে নামিয়ে দেয়।

আটককৃতরা হলেন, টাঙ্গাইলের আলেকদ্বীপ এলাকার মুনির উদ্দিন বেপারীর পুত্র মো. আবদুল আলিম (২২), একই এলাকার শহীদ মন্ডলের পুত্র শামীম মন্ডল (২২), সিরাজগঞ্জের বেলকুচি এলাকার মুনিরুল ইসলামের পুত্র মুনাউল্লাহ (২২), একই এলাকার দুলালের পুত্র ইব্রাহিম (২২), আপন প্রমানিকের পুত্র মুনিরুল ইসলাম (২০), মো.হোছাইনের পুত্র জুয়েল (২০), উল্লাপাড়ার মোতালেবের পুত্র বিল্লাল (১৮), নজরুল প্রমানিকের পুত্র মাজেদুল (১৮), হাড়িভাঙ্গার উল্লাপাড়ার মৃত. ফজলুল হক প্রমানিকের পুত্র মামুন রানা (২০), চর ইসলামপুর বিজয় নগর বি.বাড়িয়া এলাকার চানমিয়া মেম্বারের পুত্র সুমন (২০), তাজুল ইসলামের পুত্র আল আমিন (২০), নরসিংদীর কালাচান্দা এলাকার দুলালের পুত্র মোমেন (১৮), আবদুল বাতেনের পুত্র কাউছার (১৫), আবু হান্নানের পুত্র আবু তালেব (১৮), নরসিংদীর ঘোড়াদ্বীপের জহিরুল হকের পুত্র আজাদ (৩২), আবু তাহের মোল্লার পুত্র কামাল (৩০), শ্রীনগরের চান মিয়ার পুত্র আবদুল (৩৫), কালাকান্দার হাবিজ উদ্দিনের পুত্র জামান (২০), আলতাফ হোসেনের পুত্র হৃদয় মিয়া (১৮), আবদুল বাতেনের পুত্র বিল্লাল (২৫), গাজীপুরের আশুলিয়ার শরিফতউল্লাহর পুত্র মোরাসেল (২০)।

আটককৃত ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক দালাল তাদেরকে মালেশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শনিবার রাতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতু এলাকায় নিয়ে আসে। পরে তাদের মোবাইল ও সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে ওখান থেকে মধ্যরাতে ইঞ্চিন চালিত নৌকায় তুলে নদী পথে এনে মগনামায় নামিয়ে দেয়। তাদের লোকজন এসে এখান থেকে সরাসরি মালেশিয়ার একটি বোটে তুলে নিয়ে যাবে বলে মগনামা ঘাটে নামিয়ে দিয়ে দালালরা কেটে পড়ে। একইভাবে গত ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় উপজেলার পশ্চিম উজানটিয়া ফরেষ্ট ম্যানগ্রোভ এলাকায় মালেশিয়াগামী ২০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ১৪ দিনের মাথায় আবারো অবৈধ পথে মালেশিয়াগামী ২১ যাত্রীকে উদ্ধার করছে পেকুয়া থানা পুলিশ।

এলাকাবাসীর ধারণা মালেশিয়া আদম পাচারকারী চক্র বিভিন্ন এলাকার কম বয়সী যুবকদেরকে মালেশিয়া পাঠানোর কথা বলে পেকুয়া উপজেলার উপকুলীয় ইউনিয়ন মগনামা ও উজানটিয়াকে প্রতারণার কেন্দ্রস্থল বলে চিহ্নিত করছে। এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি মো. আবদুর রকিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি আটকের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন আটককৃতদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, পেকুয়ায় যদি এ ধরণের আদম ব্যবসায়ী থাকে তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এমকেইউ/এএস/সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৪)