সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর গ্রামের অদূরে বরণী নদীর দুই পাশে ১০০ হেক্টর উঁচু জমিতে খিরার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ও দামের কারণে খুশি ৩০০ কৃষক পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবী মোজাফরপুর গ্রামের সাগরদিঘির পাড় হতে বরণী নদী পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণ এবং ওই নদীর অপর একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হলে খিরা বাজারজাত করে খিরা চাষীদের ভাগ্য বদলে যাবে। তাছাড়া তারা বিনাসুধে খিরা চাষের জন্য ঋণও দাবী করেন। 

কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.কে.এম শাহজাহান কবীর জানান, উপজেলার ১৪ নং মোজাফরপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত মোজফরপুর গ্রামের অদূরে বরণী নদী প্রবাহিত। জালিয়ার হাওরের বুক ছিড়ে ওই নদীর দুই পাশের ১০০ হেক্টর উঁচু জমিতে মোজাফরপুর বানিয়াগাতি গ্রামের ৩০০ কৃষক পরিবার খিরা চাষ করেছেন।

উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদের প্রায় আড়াই লাখ টাকার আর্থিক সহায়তায় ৭৫ জন অসচ্চল কৃষককে বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক, ছত্রাকনাশক, হরমোন, ৭টি স্প্রে মেশিন, এবং পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে পোকা দমনের জন্য ৭৫০টি সেক্স ফেরোমন ফাঁদ পাতা হয়েছিল। তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগের ৩ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ৩০০ কৃষক পরিবারকে সময় সময় খিরা চাষ উৎপাদনে সফলতা আনতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছেন।

খিরা চাষের ফলন দেখতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খিরা চাষ এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের সুখ দুঃখের খবর নিয়েছেন। অন্য বছর এক হেক্টর জমিতে প্রায় ১৫ মেট্রিকটন খিরা উৎপাদন হত। কিন্তু এবার কৃষি বিভাগের নজরধারী বেশি থাকায় প্রতি হেক্টরে ২০ মেট্রিকটন খিরা উৎপাদন হয়ে বাম্পার ফলন হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন খরচ পরেছে ৩০ হাজার টাকা। তবে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে পাইকারি ভাবে খিরা বিক্রি হচ্ছে। এতে ১ মেট্রিকটন খিরার দাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা হলে ১০০ হেক্টর জমিতে ৩০০ কৃষক প্রায় ৫ কোটি টাকার মতো এবার খিরা বিক্রি করতে পারবেন।

মোজাফরপুর ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জাকির আলম ভূঞা বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারী মোজাফরপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭০টি পরিবারের মাঝে ১শ ৪০ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করেছেন এম.পি অসীম কুমার উকিল ও নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমান। ওই দিন এম.পি এবং জেলা প্রশাসক দুজনেই খিরার বাম্পার ফলন দেখে খুব খুশি হয়ে কৃষকদের দাবীর রাস্তা পাকা করে দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ওই রাস্তাটি পাকা এবং নদীর উপর ব্রীজ নির্মান করা হলে খিরা বাজারজাত করণের ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা আসবে এর ফলে ওই এলাকাটি অর্থনৈতিক ভাবে অনেক এগিয়ে গিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতেও এর প্রভাব বিস্তার করবে।

(এসবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২)