গৌরীপুর প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার গুজিখাঁ গ্রামে ফসলের মাঠে ফুটে আছে শত শত সূর্যমুখী ফুল। শীতের কোমল রোদের আলোতে ফুলগুলো যেন হাসছে। ফসলের মাঠে অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সবুজের মাঝে শতশত হলুদ সূর্যমুখী ফুল। দর্শনার্থীরাও ভীড় জমিয়েছে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তবে এটি কিন্তু কোন ফুলের বাগান নয়, সূর্যমুখী বীজ থেকে তৈল উৎপাদনের জন্য এ ফুলের চাষ করা হয়েছে। 

জানা যায়, কৃষি অধিদপ্তরের তৈলবীজ উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা নিয়ে গুজিখাঁ গ্রামে ২০শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেন রামগোপালপুর ইউনিয়নের নওয়াগাও গ্রামের হাজী নূরুল ইসলামের ছেলে কৃষক জাহাঙ্গীর হাসান। ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে বীজ রোপণ করেন তিনি। কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সঠিক পরিচর্যায় গাছগুলো বড় হওয়ার সাথে সাথে ফুলে ফুলে ভরে গেছে সূর্যমুখীর ক্ষেতটি। যা দেখে মুগ্ধ কৃষক জাহাঙ্গীর হাসান লাভের স্বপ্ন দেখছেন। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ফুল থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফসলের মাঠে সবুজ গাছে হলুদ ফুল অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করেছে। সবুজ পাতার ভেতর থেকে বড় বড় হলুদ সূর্যমুখী ফুলগুলো মাথা উঁচু করে প্রকৃতিতে নিজের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে। স্থানীয় দর্শনার্থীদের মাধ্যমে সূর্যমুখী ফুলের মাঠের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর দর্শনার্থী ও সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ দল বেঁধে আসতে শুরু করেছে ফুলের মাঠ দেখতে। অনেকেই মাঠের ভিতরে ঢুকে শখ করে ছবি তুলেন। এতে করে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে কৃষককে।

কৃষক জাহাঙ্গীর হাসান বলেন, গত বছরের পর এবারও কৃষি অফিসের সহায়তা নিয়ে সূর্যমুখী চাষ করেছি। আশা করছি এবার ভাল ফলন হবে। তবে সূর্যমুখীর তেল তৈরির যন্ত্র না থাকায় সরিষা বীজ ভাঙানোর যন্ত্রে সূর্যমুখীর তেল সংগ্রহ করতে হয়। এতে করে কাঙ্খিত তেল পাওয়া যায় না।

উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, আমাদের দেশে বেশিরভাগ তেল বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়।এই আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় সূর্যমুখীর চাষ করা হচ্ছে। সূর্যমুখী বীজের তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এই তেলে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল নেই।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২)