এ কে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর, হাবাসপুর, শাহামীরপুর, চর-আফড়া ও চর-রামনগর সহ বিভিন্ন এলাকার পদ্মার চরে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। এ অঞ্চলের পলিমাটি উর্বর হওয়ায় অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক এর প্রয়োজন হয় না ফসলে। এ অঞ্চলের বাদামের মান ভালো হওয়ায় প্রতিবছর বাজারজাত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পদ্মার জেগে ওঠা ওই সকল চর এলাকায় বাদাম চাষিরা শ্রমিক (কামলা) নিয়ে মাঠের পর মাঠ বাদাম রোপণ করছে।

পাংশা উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর প্রায় ৭ শত হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩ শত ৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম রোপণ করা শেষ হয়েছে।

কৃষক খোলিল মন্ডল বলেন, আমি ছোট্ট থেকেই এই বাদাম চাষের সাথে জড়িত। গতবছর আমার বাদামের জমেছিল ১০ বিঘা। ১০ বিঘা জমির মধ্যে ৮ বিঘার জমির বাদাম উঠাতে পেরেছিলাম আর দুই বিঘার জমির বাদাম উঠাতে পারিনি অতি খরার কারণে পুড়ে গিয়েছিল। গতবার আমার আট বিঘা জমিতে লাভ হয়েছিল ১০,০০০ টাকা।

কৃষক সালাম খান বলেন, বাদাম চাষে তেমন কোন খরচ নেই। চরের মাটি উর্বরের কারণে আমরা শুধু বাদামের বীজ লাগিয়ে চলে যাই, স্যার, কীটনাশক কিছুই দিতে হয়না। উঠানোর সময় এসে উঠিয়ে নিয়ে যায় তাও ১বিঘায় ৮মন করে বাদাম পাই। তবে যদি অতিরিক্ত খরার সময় পানি দেই তাহলে বিঘায় ১০ থেকে ১২ মন করে বাদাম উৎপন্ন করা যায়।

কৃষক কুদ্দুস মোল্লা বলেন, গতবার আমাদের বাদাম ছিল ১৫ বিঘা। আমাদের বাদাম অনেক সুন্দর হয়েছিল। গতবার একটা বাধামও নষ্ট না হয়ার কারণে এবার ভাবছি আরেকটু বেশি বাদাম লাগাবো। আল্লাহ যদি বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না দেয় তাহলে এবারও বাদাম ভাল পাবো বলে আশা করছি।

পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, আমাদের পাংশা উপজেলার হাবাসপুর এবং বাহাদুরপুর পদ্মার পারে যে চর জেগে উঠেছে সেই চরে পূর্ব থেকেই বাদাম চাষ হয়ে আসে। তবে এ বছর বাদাম চাষের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। এ বছর বিনা চিনা বাদাম-৪, বিনা চিনা বাদাম-৮ দুটি উন্নত মানের বাদামের বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করেছি। আশাবাদ ব্যক্ত করছি যে এই বাদাম দুটি আমাদের এই পাংশায় ছড়িয়ে পড়বে।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২)