হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে এক স্কুল শিক্ষিকা আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে তার চাচা সুশীল দাশকে আটক করেছে পুলিশ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। আত্মহননকারী রুনু রাণী দাশ সিদ্দিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের রাণীগাঁও গ্রামের সুকুমার দাশের ৩ মেয়ে। কোন ছেলে নেই। সে হিসেবে হিন্দু সম্পত্তি আইনের বিধি মোতাবেক সম্পত্তি পাওয়ার আশায় তার সাথে ভাই সুশীল দাশের ছেলেরা প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ করতো। কারণে-অকারণে তাদের উপর নির্যাতন করতো। দফায় দফায় নির্যাতনের শিকার হলেও তারা মুখ বুজে সহ্য করেছে। সবশেষ রবিবারও চাচাতো ভাই সুমন দাশ ও নয়ন দাশ একই উদ্দেশ্যে রুনু রাণী দাশকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে সুমন দাশ তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এতে লজ্জায় অপমানে রুনু বিষপান করে।

ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, শিক্ষিকা রুনু রানী দাশ রবিবার বিকেলে টিউবওয়েলে পানি আনতে যান। এ সময় চাচা সুশীল দাশের ছেলে ভাই শুভ্র দাশ ও সত্যজিত দাশ মায়ের চিকিৎসার জন্য তার নিকট টাকা চায়। উত্তরে রুনু বলেন আমরা গরীব মানুষ। টাকা কোথা থেকে দেব। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই ভাই রুনুকে টেনে হেঁচড়ে ঘরে নিয়ে তার ওড়না ফেলে দেয়। পরে তার গায়ের জামাও প্রায় খুলে ফেলে অনেকটা বিবস্ত্র করে তাকে নির্যাতন করে। এতে ক্ষেভে অপমানে তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। সহকারি পুলিশ সুপার নাজমুল ইসলাম বলেন, আজ মামলা হবে। মেয়ের বাবার সাথে আমার কথা হয়েছে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে তারা এসে মামলা দেবে। এর পরই তদন্তে নামবে পুলিশ। ইতিমধ্যেই নির্যাতনকারীদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের বাবা সুশীল দাশকে আটক করা হয়েছে। সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. দেবাশীষ দাশ জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিষাক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তবে ভিসেরা রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু বলা যাবেনা।

(পিডিএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৪)