ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : বাণিজ্যিকভাবে বরই চাষে সাফল্য পেয়েছেন শিক্ষক নজরুল ইসলাম। এবার তার বাগানে বরইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর প্রায় এক লক্ষ  টাকার বরই বিক্রির আশা করছেন তিনি। 

নজরুল সিরাজগঞ্জে উল্লাপাড়া উপজেলা বাগধা গ্রামের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জ পুলিশ সাইন্স স্কুলে ২০১২ সালে থেকে শিক্ষকতা শুরু করেন। করোনা কালীন সময় স্কুল বন্ধ থাকায় তিনি পাঁচ হাজার টাকার ১২০টি বরইয়ের চারা কিনে এক বিঘা জমিতে চাষ করেন।

বাগান তৈরি থেকে বরই উৎপাদনে দু’বছরে তার খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। প্রথম বছরেই প্রতিটি গাছে ৭ থেকে ৮ কেজি বরই ধরে এবং ৩৭ হাজার টাকার বরই তিনি প্রথম বছরেই বিক্রি করেন। এ বছর তার প্রতিটি গাছে ৩০ থেকে ৪০ কেজি বরই এসেছে।

সরেজমিনে নজরুলের বরই বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মাটির সামান্য ওপর থেকেই বল সুন্দরী ও কাশ্মীরী আপেল কুল গাছের ডালপালা চারদিক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি ডালে প্রচুর পরিমাণে বরই ধরেছ প্রতিটি ডাল মাটিতে নুয়ে পড়ছে। যেটি দেখতে সুন্দর আবার খেতেও খুব মিষ্টি এবং সুস্বাদু । পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা তার বাগানে এসে বরই কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এবং প্রতি কেজি বরই ৪০ থেকে ৫০টাকায় বিক্রি করছেন।

বাগানের মালিক শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, বরই গাছের প্রতি আমার প্রথম ভালোবাসা শুরু হয় সিরাজগঞ্জের ইঞ্জিনিয়ার আসাদুল ভাইয়ের বরই বাগান দেখে। সেখান থেকেই আমি বাগান করার উদ্যোগ নেই। পরবর্তীতে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বল সুন্দরী ও কাশ্মীরী আপেল কুলের ১২০ পিচ চারা কিনে এক বিঘা জমিতে লাগায় এবং পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে বরই টালে বেড়া দেই। এছাড়া আনুষাঙ্গিক ২ হাজার টাকা খরচে মোট ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রথম বছরেই আমার খরচের টাকা উঠে যায়। এ বছর প্রায় ১লক্ষ টাকার বরই বিক্রি করার আশা করছি। বরই টাল ছাড়াও আমার আরও এক একর জমিতে লেবুর বাগান করা আছে যেখান থেকেও আমি অনেক সফলতা পেয়েছি।

তিনি আরো জানান, বরই টাল দেখাশোনার জন্য তেমন কোন লোকের প্রয়োজন হয় না। বছরে দুই একবার পরিচর্যা করতে হয়। সেটি তা নিজেরাই করা যায়। এবং বরই বড়ো হলে তখন দেখাশোনার জন্য একজন লোকের প্রোয়জন হয়।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি বলেন,এবার উল্লাপাড়া উপজেলায় প্রায় ২ হেক্টর জমিতে বরই চাষ করা হয়েছে। যারা বরইয়ের বাগান করেছে তাদের আমাদের কৃষি অফিসের মাঠকর্মীদের মাধ্যমে পরিচর্যা করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। আর তাদের মধ্যে যারা ভালো উদ্যোগতা রয়েছে তাদেরকে আমরা কোন প্রদর্শনী কিংবা অন্যকোন সহযোগিতার দরকার হলে দিয়ে থাকি।

(আই/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২)