মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নারীদের ধর্মীয় শিক্ষায় এগিয়ে নিতে সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নে উদ্বোধন হয়েছে সুবর্ণ মহিলা দাখিল মাদ্রাসা।

আজ শনিবার সকাল ১০ টায় সদ্য প্রতিষ্ঠিত চরজুবলী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান মার্কেটে সংলগ্ন সুবর্ণ মহিলা দাখিল মাদ্রাসার শ্রেণী কক্ষে মাদ্রাসা উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি।

সুবর্ণ মহিলা দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বিশিষ্ঠ শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক জনাব আলহাজ ছায়েদুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চরজব্বর ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) গিয়াস উদ্দিন ফরহাদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন, চরজুবলী রব্বানিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান, চরজুবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ খসরু, সুবর্ণচর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সহিদ সারওয়ারর্দ্দী, সুবর্ণ মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ভূমিদাতা বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক, দানবীর জামাল উদ্দিন চৌধুরী, শহীদ জয়নাল অবেদীন সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালরে সিনিয়র শিক্ষক মোঃ ইউছুপসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক, শিক্ষানুরাগী ও রাজনীতিবীদ মীর নিজাম উদ্দিন ফারুক, সাহাব উদ্দিন স্বপন, বেলাল হোসেন, রাশেদ নিজাম প্রমূর্খ।

বক্তারা বলেন, “এ অঞ্চলে কোন মহিলা মাদ্রসা নাই। মহিলাদের দ্বিনি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য মহিলা মাদ্রাসার বিশেষ প্রয়োজন ছিলো তা আজ পূরণ হলো। ব্যাক্তি, সমাজ, দেশকে উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষার পরিবেশ তৈরী করতে হবে। শিক্ষাই পারে সমাজ ও ব্যাক্তিকে অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখাতে। আর সেই শিক্ষা হতে হবে আল্লাহর উদ্দ্যেশে নবীর আদর্শগত শিক্ষা। যার মধ্যে মানবতার মুক্তির সকল নিয়ম-কানুন রয়েছে। নারী জাতির মেধা, মননশীলতা, বিবেক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে নারীশিক্ষায় ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়েছেন। কেননা, তিনি মনে করতেন, নারীকে শিক্ষাবঞ্চিত রেখে যেমন আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়, তেমনি শিক্ষিত জাতি গঠনে এবং পারিবারিক শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করার জন্য মেয়েদের শিক্ষা কার্যক্রমে আত্মনিয়োগ করা অনস্বীকার্য। যেমনভাবে উম্মুল মুমিনিন l কাছে আগত মহিলাদের ধর্মীয়, ব্যক্তিগত, পারিবারিক প্রভৃতি বিষয়ে নৈতিক শিক্ষাদান করতেন। যেমনভাবে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?’ (সূরা আল-জুমার, আয়াত: ৯) তাই নবী করিম (সা.) স্বয়ং নারীদের বিদ্যাশিক্ষা গ্রহণের প্রতি বিশেষভাবে সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন।

তিনি বিভিন্ন সময়ে নারীদের উদ্দেশে শিক্ষামূলক ভাষণ দিয়ে উদাত্তকণ্ঠে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জন করা ফরজ।’ (ইবনে মাজা) ইসলাম নারীকে মৌলিক মানবাধিকার তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে পুরুষের সমান মর্যাদা প্রদান করেছে। ইসলাম নারীকে বিদ্যাশিক্ষার অধিকার দিয়েছে। ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবনের শিক্ষা-দীক্ষা এবং যাবতীয় দায়দায়িত্বের সঙ্গে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সুযোগ নারীর রয়েছে।

বক্তারা পুরষদের শিক্ষার পাশাপাশি নারীদের বেশি করে শিক্ষিত করে তোলার গুরুত্বারোপ করেন। এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের ভর্তি করে দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২)