শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরে গত তিন দিন যাবত অবিরাম বর্ষণ চলছে। অতিবর্ষণের ফলে শেরপুর সদরসহ ঝিনাইগাতি ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মতো দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে পাহাড়ি ঢল। বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার অর্ধশত গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবে ক্ষেতে আমন আবাদ।

২৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বন্যাকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ভোগাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদী সংলগ্ন এলাকার মসজিদ-মাদরাসা, স্কুল থেকে শুরু করে কবরস্থান পর্যন্ত পানির নিচে। পানির তোড়ে ভেঙ্গে পড়েছে ওইসব এলাকার শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি। দরিদ্র মানুষ মাচা বেঁধে তার উপর আশ্রয় নিয়েছে। অনেক স্থানে সড়ক বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, টানা বর্ষণের ফলে ভোগাই নদীর পানির তীব্রতা কমছে না। ফলে বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি সড়ছে না। মঙ্গলবার দুপুর পযৃন্ত ভোগাই নদীর পানি নালিতাবাড়ী পয়েন্টে বিপদসীমার আট সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

দুইটি স্থানে ভোগাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণতীর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে নালিতাবাড়ী উপজেলার পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়নের অন্তত অর্ধশত গ্রামের মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল থেকে শুরু করে কবরস্থান পর্যন্ত জলমগ্ন হয়ে পড়ায় যেন মানুষের দাড়ানোর ঠাঁই নেই। বিশেষ করে-বাঘবেড় ইউনিয়নের ঝাঙ্গালিয়াকান্দা, শিমুলতলা, মরিচপুরান ইউনিয়নের গোজাকুড়া, কয়ারপাড়, ভোগাইরপাড়, মরিচপুরান ও খরখরিয়াকান্দাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পানির উপর ভাসছে।

এসব গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। পানির তোড়ে ভেঙ্গে পড়েছে এসব গ্রামের অন্তত অর্ধশত কাঁচা ঘর-বাড়ি। ফলে মানুষ চৌকির উপর অথবা মাচা বেঁধে করুণ অবস্থায় বসবাস করছে। অনেক স্থানে কাচা এবং পাকা রাস্তা বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গবাদিপশু পাকা রাস্তায় এবং ব্রিজের উপর আশ্রয় নিয়েছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে বন্যা কবলিত এলাকাসমূহে। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর জমির আমন আবাদ।

দুপুরে নালিতাবাড়ীর ইউএনও আবু সাইদ মোল্লা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জানান, ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণে কাজ চলছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিদিন পরিস্থিতি অবহিত করা হচ্ছে। জিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক জানান, বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীর ৫ ইউনিয়নের ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ঝিনাইগাতী-শেরপুর সড়কের বগাডুবি ব্রীজের দক্ষিণ পাশে ফাটল দেখা দিয়েছে।

(এইচবি/এএস/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৪)