বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি : আজ মঙ্গলবার ভোরে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় স্কুল পড়ুয়া মেয়ের (১৪) শ্লীলতাহানীর অভিযোগে পুলিশ এক বাবাকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় মেয়ের মা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্য়াতন আইনে মামলা করেছেন। তবে থানা হাজতে আটক বাবা তার সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী ঘটনাটি সাজিয়ে মামলা করেছেন বলে দাবি করেন। পুলিশ প্রাথািমক তদন্তে সত্যতা পেয়েছে দাবি করে জানিয়েছে ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য আগামীকাল বুধবার মৌলভীবাজার হাসপতালে পাঠানো হবে।

পুলিশ, মামলার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার গাংকুল (খনকার টিলা) গ্রামের ওহিদ মিয়া (৫০) দীর্ঘদিন ধরে তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর বড়মেয়েকে বিগত দুই বছর ধরে রাতের আধারে শ্লীলতাহানী করে আসছিলো। লোক-লজ্জার ভয়ে মেয়েটি মুখ খুলে কাউকে বলেনি। চলতি বছরের মে মাসের ২৮তারিখ মেয়ের মা (ওহিদ মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিন বেগম) রাতে ঘটনাটি দেখে ফেলে এবং স্বামীকে বারণ করেন। এর পর থেকেই দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার তিন কন্যা সন্তানের উপর খড়গ নেমে আসে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। ।

দ্বিতীয় স্ত্রী শিরিন বেগম(৩৫) জানান, তিনি ঘটনাটি দেখার পর থেকেই জঘন্যতম পাশবিক কাজ থেকে স্বামীকে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে বিরত থাকার কথা বলায় যখন-তখন তাকে ও তার সন্তানদের তিনি (ওহিদ)মারধর করেন। নিরুপায় হয়ে তিনি তার তিন মেয়েকে পিতার বাড়ী পাশ্ববর্তী বটতল গ্রামে চলে গেছেন।

থানায় বসে থাকা অষ্টম শ্রেনী পড়ুয়া ভিকটিম এ প্রতিনিধিকে জানায়, তার পিতা প্রায় দুবছর ধরে রাতে তাকে শ্লীলতাহানী করে আসছেন। প্রথম প্রথম তার বাবা শ্লীলতাহানী করলেও এক পর্যায়ে তার সাথে দৈহিক মিলন ও করেন। চলতি মাসের জুন মাসে সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে তার পিতা তাকে ছোট ছোট গুলি জাতীয় ঔষধ (ঔষধের নাম বলতে পারেনি) খাওয়ান। এতে তার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। সে আরো জাানায়, সে পঞ্চগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশুনো করছে। প্রায় পনের দিন আগে ঘটানিট লোকেমুখে প্রকাশ পাওয়ায় তার বাবা স্কুলের বইগুলো লুকিয়ে ফেলেছেন।

থানা হাজতে আটক ওহিদ আহমদ এ প্রতিনিধিকে জানান, তার প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাত করার জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী বড় মেয়েকে কৌশলে আয়ত্বে নিয়ে ঘটনাটি সাজিয়ে মামলা করেছেন। তার প্রথম পক্ষের স্ত্রীসহ এক ছেলে রয়েছে। ছেলে বর্তমানে প্রবাসে রয়েছে।

বড়লেখা থানার ওসি (তদন্ত) আকবর হোসেন জানান, তিনি এলাকায় গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বুধবার মৌলভীবাজার হাসপতালে পাঠানো হবে। ডাক্তারী প্রতিবেদন পাওয়া গেলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনায় থানা ভিকটিমের মা শিরিন বেগম বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

(এলএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৪)