সাংস্কৃতিক অঙ্গনের দিকপাল আবু তৈয়ব পচুর আজ মৃত্যুবার্ষিকী
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার কুমারখালির সাংস্কৃতিক অঙ্গনের দিকপাল অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক আবু তৈয়ব পচুর আজ দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
২০১২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯৩৭ সালের ১ জুলাই নানাবাড়ি খোকসা উপজেলার মোড়াগাছা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা প্রয়াত ইয়াছিন আহমেদ ও মা প্রয়াত রুপজান নেছা। কুমারখালি এমএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাশ করেন তিনি। তবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের একটি অংশ লেখাপড়া করেন মাগুরায় খালার বাড়িতে।
খালাতো ভাই আলাউদ্দিন আহমেদের হাত ধরে ১৯৪৮ সালে টিপু সুলতান নাটকের (আবদুল খালেক নামে) শিশুশিল্পী চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন। নাটকটি মাগুরা থিয়েটারের আয়োজনে আলাউদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় মাগুরা টাউন হলে মঞ্চায়িত হয়।
এছাড়া তরনী সেন বধ, উল্কাসহ বিভিন্ন নাটকে তিনি শিশু চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৫৫ সালে কুমারখালি এমএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সরত চাটুজ্যের ‘রামের সুমতি’ নাটকে ভোলা চরিত্রে অভিনয় করেন। নাটকটি স্কুলের পন্ডিত মশাই কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী ও তার পরিচালনায় মঞ্চায়িত হয়। নাটকটি সফল হওয়ায় পন্ডিত মশাই ও তৎকালিন সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া শহরের বিভিন্ন মঞ্চে নাটক পরিচালনার জন্য তাকে উদ্বুদ্ধ করেন।
১৯৬৬ সালে কারিগরের পরিচালনায় ‘সপ্তডিঙ্গা’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সহকারী পরিচালক ও অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন আবু তৈয়ব পচু। এরপর ‘সকিনা’, ‘মিশর কুমারী’ ও মিতা পরিচালিত ‘এরাও মানুষ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রধান সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৬১ সাল ১ বছর রেডিও পাকিস্তানে নাটকে অভিনয় করেন। রেডিওতে ৬টি নাটক ও ২টি জীবন্তিকায় অভিনয় করেন তিনি। এর মধ্যে সারেং, রাত্রি শেষে উল্লেখযোগ্য। অর্থনৈতিক দৈন্যতা ও সন্তানদের লেখাপড়ার কথা বিবেচনা করে একযুগ চলচ্চিত্রে কাজ করে ফিরে আসেন কুমারখালিতে।
১৯৭৪ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি কুমারখালি পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন। তার নির্দেশিত নাটকের সংখ্যা প্রায় ২শ। প্রদর্শনীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার। তিনি দেশের বিভিন্ন মঞ্চে ৩শ নাটকে অভিনয় করেছেন।
তিনি কুমারখালি টাউন ক্লাব, রুপালী সাংস্কৃতিক সংঘ, কুমারখালি থিয়েটার, সোনালী সাংস্কৃতিক সংঘ ও সান্ধ বাসর থিয়েটারের বিভিন্ন পদে থেকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েও তিনি ছিলেন একজন সফল অভিনেতা ও সফল বাবা। তার ৬ ছেলেমেয়ে সবাই উচ্চতর ডিগ্রিধারী।
(কেকে/এনডি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৪)