অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝিনাইদহের উন্নয়ন প্রকল্প গুলো ঝিমিয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে অনেক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। দরপত্র দাখিলের সময়ে দেওয়া দামের থেকে বর্তমানে প্রায় ২৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেকে লোকশান গুনতে হবে বলে কাজও বন্ধ করে দিয়েছেন।

ঠিকাদারদের অভিযোগ, যখন দরপত্র আহবান করা হয়েছিল, তখন ইট, সিমেন্ট, পাথর, রড ও বিটুমিন সহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম কম ছিলো। বর্তমানে নির্মান সামগ্রীর দাম ২৫ শতাংশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে তারা অনেকে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রকল্প গুলো বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় নেই তাদের। কারণ বর্তমান বাজারদরে কাজ করলে লোকশান গুনতে হবে লাখ লাখ টাকা।

ঝিনাইদহের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএমআর কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান মাসুম জানান, তার প্রতিষ্ঠানের নামে বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলমান আছে। প্রকল্পের কাজ করতে খুব কষ্টসাধ্য হচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। টাকা হলেও নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে ৪২০ টাকা দামের সিমেন্ট ৫৮০ টাকা, ১৫৫ টাকার পাথর ২১৬ টাকা, ৫৫ টাকা দামের রড ৯৫ টাকা, সাত হাজার টাকা দামের বিটুমিন ১১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শৈলকূপার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোল্যা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শামীম হোসেন মোল্যা বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের নামে অনেকগুলো কাজ চলমান আছে। প্রকল্প গুলোর মধ্যে কয়েকটি কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। হঠাৎ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি প্রকল্প গুলোর কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। তবে এলজিইডি দপ্তর থেকে বারংবার কাজ শেষ করতে একাধিক পত্র দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ চলমান রাখতে গেলে লোকশান গুনতে হবে লাখ লাখ টাকা। এমন অভিযোগ ঝিনাইদহের অধিকাংশ ঠিকাদারদের।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. বাসের আলম সিদ্দিকী জানান, তার প্রতিষ্ঠানের নামে এলজিইডিসহ বিভিন্ন দপ্তরের কয়েকটি কাজ চলমান আছে। পূর্বের দাম ছাড়া বর্তমান বাজার মূল্য ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ গুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীও পাওয়া যাচ্ছে না সময় মতো। সব মিলিয়ে প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন করতে গেলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলোকে লোকশান গুনতে হবে লাখ লাখ টাকা। যে কারণে অনেক ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখেছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দপ্তর ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনোয়ার উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

(একে/এসপি/মার্চ ২৫, ২০২২)