নাটোর প্রতিনিধি :নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে এক প্রসূতির রাস্তায় সন্তান প্রসবের পর নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। এদিকে ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার আকস্মিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে শামীমা আক্তার (৩০) নামে এক প্রসূতি হাসপাতাল গেটের বাইরে রাস্তায় এসে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। কিন্তু জন্মের কিছু সময় পরেই নবজাতক মারা যায়।
শামীমার বাবা নাটোরের লালপুর উপজেলার নাগদহ গ্রামের সাজেদুর রহমান অভিযোগ করেন , পেটে ব্যাথা অনুভব করার পর তার গর্ভবতী মেয়ে শামীমাকে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আনেন। হাসপাতালে পৌছার দেড় ঘন্টা পর মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৫ মিনিটের সময় শামীমাকে ভর্তি করা হয় । কিন্তু ভর্তির আধাঘন্টা পেরোলেও চিকিৎসা সেবা না দিয়ে ফেলে রাখা হয় তাকে। সে সময় চিকিৎসক-নার্সদের কাছেও বারবার অনুরোধ করেও কোন কর্নপাত করা হয়নি। এসময় প্রসব যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে শামীমা চিৎকার শুরু করলে ক্লিনিকে ভর্তি করার জন্য হাসপাতালের বাইরে বের করে আনা হয়। হাসপাতাল গেটের বাইরে বের করে আনার পর শামীমা রাস্তার ওপর এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু জন্মের কিছু সময় পরই নবজাতকটি মারা যায়। তবে এই অভিযোগ তাৎক্ষনিক অস্বীকার করেন কেন্দ্রের আবাসিক ডাক্তার নুজহাত নওরিন । তিনি জানান,রোগী এবং তার স্বজনরা তাদের সাথে র্দুব্যবহার করে। চিকিৎসা না নিয়েই রোগী ও তার অভিভাবকরা হাসপাতাল ছেড়ে যায়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় আলোচনার ঝড় ওঠে। স্থানীয় দায়ী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিচার দাবী করলে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। পরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাটোরের সিভিল সাজর্ন ফেরদৌস নীলুফার বিষয়টি সম্পর্কে সুষ্ঠ তদন্তের জন্য সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বেলাল হোসেনকে প্রধান এবং সদর হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডাঃ আকলিমা খাতুন ও সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ এস এম ফেরদৌসকে সদস্য করে বুধবার রাতেই তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
সিভিল সাজর্ন ফেরদৌস নীলুফার জানান, কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ঘটনার প্রমান পাওয়া গেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঘটনা জানতে পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখানে তিনি প্রতিটি বিভাগ ঘুরে দেখেন এবং রোগীদের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি ডাক্তারদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্রেনজন চাম্বু গং, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অধ্যাপক আবুল হোসেন, সাধারন সম্পাদক সেকেন্দার রহমান, বাগাতিপাড়া প্রেস ক্লাব সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন, থানা অফিসার ইনচার্জ আমিনুর রহমান প্রমুখ।
(এমআর/এসসি/ সেপ্টেম্বর২৫,২০১৪)